এখন সম্ভবত আমাদের সকলের AI আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স সম্পর্কে একটি সাধারণ ধারণা থাকার সময় এসে পড়েছে। আপনি হয়ত জেনে অবাক হবেন, আপনি ইতোমধ্যেই আপনার দৈনন্দিন জীবনে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ব্যবহার করছেন। আর সেটাই বা কীভাবে সম্ভব তা আমরা বিস্তারিত জানব এই কন্টেন্টে। আমরা জানব কীভাবে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা অনেক শিল্পকে পরিবর্তন করছে, কীভাবে ব্যবসায়িক প্রক্রিয়া পরিবর্তন করছে বা কীভাবে আমরা এআই-এ ক্যারিয়ার গড়তে পারব। আরো জানব এআই কীভাবে কাজ করে এবং এর কম্পোনেন্টগুলো কী কী। একই সাথে ডিপ লার্নিং ন্যাচারাল ল্যাঙ্গুয়েজ প্রসেসিং সম্পর্কেও জানব। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা কীভাবে চাকরির বাজারকে পরিবর্তন করছে তা নিয়েও বিস্তারিত জানব আমরা এই আলোচনায় । বিশেষ করে সেল্ফ-ড্রাইভিং পরিবহনগুলো এআই ব্যবহার করে জীবনযাত্রায় যে বিশাল পরিবর্তন আনবে তা নিয়ে সহজ সরল ধারণা নেব আজকের এই টপিক থেকে।এআই কীভাবে রোবটদের পরিচালিত করছে এবং কীভাবে তারা আমাদের জীবন পরিবর্তন করবে,আরও জানব বড় বড় টেকনোলজি কোম্পানিগুলোর কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা কার্যক্রম নিয়ে।
প্রযুক্তিগত পরিভাষা নিয়ে ঘাবড়াবেন না। অনেক সহজ-সরলভাবে এই কন্টেন্ট সবার পড়ার উপযুক্ত করে লেখা হয়েছে।
কিছুদিন আগেও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা Artificial Intelligence ছিল দূর ভবিষ্যতের একটি কাল্পনিক বিষয়। কিন্তু অতি সম্প্রতি এই দূরবর্তী ভবিষ্যতের বিষয়টি আমাদের দৈনন্দিন জীবনের অংশ হতে শুরু করেছে। তার প্রধান কারণ, পৃথিবীর মানুষ ডিজিটাল বিশ্বে এমনভাবে সম্পৃক্ত হয়েছে যে, হঠাৎ করে অচিন্তনীয় পরিমাণ ডেটা সৃষ্টি হয়েছে এবং সেই ডেটাকে প্রক্রিয়া করার মত ক্ষমতাশালী কম্পিউটার আমাদের হাতে চলে এসেছে। এই ডেটা বা তথ্যকে প্রক্রিয়া করার জন্য বিজ্ঞানী এবং প্রযুক্তিবিদরা এমন একটি পদ্ধতি বেছে নিয়েছে যেটি মানুষের মস্তিষ্কের মতো করে কাজ করে। সাধারণভাবে এটা নিউরাল নেট নামে পরিচিত। সহজভাবে বলা যায় এর একটি ইনপুট স্তর এবং আউটপুট স্তর রয়েছে যার মাঝখানের স্তরটি হচ্ছে ‘লুক্কায়িত’ স্তর।
আসুন আজকে আমরা এর শুরু থেকে শেষের আধিপত্য সম্পর্কে জানবো
চিন্তাশক্তি, বুদ্ধি কিংবা বিশ্লেষণ ক্ষমতা মানুষের সহজাত, কিন্তু একটি যন্ত্রকে মানুষের মতো বুদ্ধিমত্তা দিয়ে, সেটিকে চিন্তা করানো কিংবা বিশ্লেষণ করানোর ক্ষমতা দেওয়ার এই ধারণাটিকে সাধারণভাবে Artificial Intelligence বা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বলা হয়।এ-আই কম্পিউটার বিজ্ঞানের একটি শাখা যার লক্ষ্য মানুষের বুদ্ধিমত্তা দিয়ে এ-আই কিছু মানুষ রাজনৈতিক ফায়দা নিতে ভুয়া খবর তৈরি করছে। তার পর কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাকে ব্যবহার করে তারা সেই খবরটা ছড়িয়ে কম্পিউটার বা মেশিন তৈরি করা। এ-আই বলতে শেখার, চিন্তাভাবনা, সিদ্ধান্ত নেওয়া এবং সমস্যা সমাধানের মতো মানুষের বুদ্ধিমত্তার প্রক্রিয়াগুলিকে মেশিনের ক্ষমতা বোঝায়।
এর মধ্যে রয়েছে প্যাটার্ন রিকগনিশন, মেশিন লার্নিং, নিউরাল নেটওয়ার্ক, বিগ ডেটা, সেলফ অ্যালগরিদম ইত্যাদির মতো প্রযুক্তি। এ-আই হল একটি জটিল প্রযুক্তি যা মেশিনে একটি নির্দিষ্ট ডেটা প্রবেশ করানো এবং বিভিন্ন পরিস্থিতিতে প্রতিক্রিয়া তৈরি করে। AI হল স্ব-শিক্ষার নিদর্শন তৈরি করা যা মেশিনগুলিকে মানুষের মতো প্রশ্নের উত্তর খুঁজে পেতে সাহায্য করবে।
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার লক্ষ্য হচ্ছে এমন প্রযুক্তি তৈরি করা যার মাধ্যমে কম্পিউটার এবং মেশিনগুলো বুদ্ধিমান পদ্ধতিতে কাজ করতে সক্ষম হবে। বুদ্ধিমত্তার তৈরি সাধারণ সমস্যাগুলো কয়েকটি সমস্যায় বিভক্ত করা হয়েছে।
আপনি এবং আমি জানি এগুলো মূলত রোবট বা বট। এগুলোকে ইন্টারনেটের বিশাল তথ্যভান্ডার থেকে প্রশিক্ষণ দিয়ে রাখা হয়েছে। এগুলোর মধ্যে ডিজিটাল বই থেকে শুরু করে রেডিটের মতো অনলাইন সাইটের কথোপকথন শেখানো আছে।বিশেষজ্ঞরা বলেন, চ্যাটবট বিভিন্ন প্যাটার্ন খুঁজে বের করতে এবং কথোপকথন অনুকরণে অবিশ্বাস্যভাবে পারদর্শী। তবে এটি অর্থ ব্যাখ্যা করতে পারে না। যুক্তরাষ্ট্রের নর্থওয়েস্টার্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার বিজ্ঞানের অধ্যাপক ল্যারি বার্নবাউম বলেন, চ্যাটবট অটোকমপ্লিটের দ্রুত অনুকরণের সংস্করণ।চ্যাটজিপিটি ভাষাগত দক্ষতায় ব্যবহারকারীদের মুগ্ধ করেছে। চ্যাটজিপিটি ব্যবহার করে সম্পূর্ণ উপন্যাস লেখা, কোড লেখা, টেলিভিশনের জন্য ধারবাহিক নাটক ও গান লেখার মতো কাজ করা সম্ভব হয়েছে। জিপিটি অর্থ হচ্ছে ‘জেনারেটিভ প্রি-ট্রেইন্ড ট্রান্সফরমার’। জেনারেটিভ অর্থ হলো এটি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সাহায্যে কোনো কিছু তৈরি করা।
এই প্রবণতা তৈরি হয়েছে মূলত চ্যাটজিপিটি নামের একটি Artificial Intelligence বাজারে আসার পর।ভাষাভিত্তিক এই চ্যাটবট তার তথ্যভাণ্ডার বিশ্লেষণ করে প্রায় সব প্রশ্নেরই জবাব দিতে পারে।
চ্যাট জিপিটি রচনা লিখতে পারে, চাকরির বা ছুটির আবেদন, যেকোনো রিপোর্ট তৈরি করতে পারে, এমনকি গান ও কবিতাও লিখতে পারে।হিউম্যান মাইন্ড, আমি ব্রেইন বলছি না, বলছি হিউম্যান মাইন্ড, সেটা অনেক বেশি ক্ষমতাবান। এই মাইন্ডের যে কল্পনা ও চিন্তা শক্তি, মেশিন এখনও সেটা পারে না। আমি বিশ্বাস করি যন্ত্রের এই ক্ষমতা তৈরি হতে হতেই মানুষ এর সঙ্গে নিজেকে মানিয়ে নেবে।
মানুষ যেহেতু এই AI বানাচ্ছে, মেশিন যদি কিছু জায়গায় মানুষকে ছাড়িয়েও যায়, মানুষ এটাকে তার হাতের মধ্যেই রেখে দিবে। মানুষই নতুন নতুন প্রযুক্তি তৈরি করবে যা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাকে সামাল দেওয়ার রাস্তা বের করে ফেলবে।আমার মনে হয় না, মানুষের জন্যে বিপজ্জনক হয়ে উঠছে,আপনার কী মতামত কমেন্ট করে জানিয়ে দিন।
ফেক নিউজ ছড়ানোর পেছনে কিন্তু সরাসরি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা নেই। কিছু মানুষ রাজনৈতিক ফায়দা নিতে ভুয়া খবর তৈরি করছে। তার পর কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাকে মানে AI ব্যবহার করে তারা সেই খবরটা ছড়িয়ে দিচ্ছে। কিন্তু আপনি দেখবেন আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স কিন্তু মানুষকে সাহায্য করছে খবরটা ভুয়া কি না সেটা পরীক্ষা করে দেখতে পারেন ।
চ্যাট জিপিটি বাজারে আসার পর থেকে এটি অনেক উদ্বেগ তৈরি করেছে আপনার-আমার মাঝে। কিছু মানুষ মনে করে যে চ্যাট জিপিটি এতটাই শক্তিশালী যে এটি মানুষের জন্য বিপজ্জনক হতে পারে। তারা এই ব্যাপারে অবগত যে চ্যাটজিপিটি ব্যবহার করে ভুল তথ্য ছড়ানো যেতে পারে, বা এটি ব্যবহার করে মানুষকে নিয়ন্ত্রণ করা যেতে পারে।কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা একটি বিপজ্জনক প্রযুক্তিও হতে পারে। এআই-এর বিপজ্জনক হয়ে ওঠার সম্ভাবনা রয়েছে কারণ এটি খুব শক্তিশালী এবং এটি মানুষের নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যেতে পারে,আসলে এমন কিছুই না। AI ব্যবহারে সুফল বয়ে আনবে ঠিকই ,তবে বুঝে শুনে সঠিক উপায়ে এর ব্যবহার করবো আমরা। ফেক নিউজ ছড়ানোর পেছনে কিন্তু সরাসরি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা নেই। AI যতোই অগ্রগতি হোক না কেন মানুষের প্রয়োজন কখনোই ফুরাবে না। কারণ এসব কিছুই করা হচ্ছে মানুষের জন্য।উপরিউক্ত আলোচনা থেকে আমাদের বুঝে যাওয়ার কথা আমাদের বন্ধু নাকি শত্রু ,আশা করি আপনারা বুঝতে পেরেছেন।
“আমরা যা দেখছি, তা হলো অসম্ভব শক্তিশালী এক প্রযুক্তি আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স । এটি শুরুর পর্যায় মাত্র। ইতিহাসে সব সময় দেখা গেছে, এ ধরনের শক্তিশালী নতুন প্রযুক্তি ভালো এবং মন্দ – উভয় কাজেই ব্যবহৃত হয়।AI একটি শক্তিশালী হাতিয়ার, এবং এটি ভাল বা মন্দের জন্য ব্যবহার করা যেতে পারে। আমাদের এর সম্পর্কে সচেতন হওয়া এবং এটিকে কীভাবে ব্যবহার করা উচিত সে সম্পর্কে সিদ্ধান্ত নিবো।
আসন সংখ্যার উপর ভিত্তি করে ইউ ওয়াই ল্যাবের সকল অনলাইন কোর্সে পাবেন ১০০% স্কলারশিপ! আসন নিশ্চিত করতে রেজিঃ করুন এখনই।