ব্লকচেইন প্রযুক্তি হতে চলছে এক যুগান্তকারী বিপ্লব

Created by UY LAB in News 24 Jan 2024
Share

ব্লকচেইন হল disruptive technology যার মানে হল কোন সিস্টেমকে পুরোপুরি ভাবে বদলে দেয়া। এই টেকনোলজি মূলত ট্রাস্টের জন্যই ফেমাস হয়েছে। যেমন- অরিজিনাল প্রডাক্ট ডিফাইন্ড করা, অনুদানের ব্যবস্থায় স্বচ্ছতা,ডাটা বড় বড় কোম্পানির নিজস্ব কন্ট্রোলে না থাকা ইত্যাদি।চেইন অর্থ আমরা সবাই জানি। অনেকগুলো একই বস্তু বা ম্যাটেরিয়াল পাশাপাশি একটির সাথে আরেকটি কানেক্ট করে সেগুলোকে একটি শিকলের মত করাকেই আমরা চেইন বুঝি।

চেইনের ক্ষেত্রে যে ব্লকগুলোর দ্বারা এই চেইনটি তৈরি করা হয় সেই ব্লকগুলো মূলত ইনফরমেশন বা ডাটা স্টোর রাখে।ক্রিপ্টোগ্রাফিক টেকনোলজি ব্যবহার করে সর্বপ্রথম কাজ করা হয় ১৯৯১ সালের দিকে, যদিও তা সফলতার মুখ দেখতে না পাওয়ার ফলে তার ব্যবহার বিস্তার লাভ করতে পারেনি। ২০০৮ সালে সাতোশি নাকামোতো নামে এক পরিচয় বিহীন ব্যক্তি,যিনি ক্রিপ্টোকারেন্সি তথা বিটকয়েনের লেনদেনের জন্য এই টেকনোলজির ব্যবহার শুরু করেন । বর্তমানে যার ফলে ব্লক-চেইন এর ব্যবহার সম্পর্কে আজ বিশ্বব্যাপি সচেতনতা শুধু বেড়েই চলছে । [Blockchain] টেকনোলজিটি অনেক আগে থেকেই আছে এবং অনেক ক্ষেত্রে ব্যবহারও হয়ে আসছে। কিন্তু সাধারণ মানুষের এই টেকনোলজিটির প্রতি আগ্রহ তৈরি হয় মূলত ২০০৯ সালে বিটকয়েন নামের ক্রিপটোকারেন্সিটি উদ্ভাবন হওয়ার পরে। টেকনিক্যালি বলতে হলে ব্লক-চেইন হচ্ছে একটি ডিস্ট্রিবিউটেড লেজার যেটি সকলের জন্য উন্মুক্ত।ব্লকগুলোর মধ্যে যখন একটি ডেটা এন্ট্রি করা হয়, তখন ওই ডেটাটিকে ডিলিট করা বা ডেটাটির কোন ধরনের পরিবর্তন করা প্রায় অসম্ভব। 

ব্লকচেইন কী ?

আপনি হয়ত  (Blockchain), ডিজিটাল কারেন্সি বা বিটকয়েনের নাম শুনে থাকবেন । আপনি হয়ত ভাবছেন  এগুলো কি ? বা এগুলো আমাদের কী কাজে লাগতে পারে ? আজ আপনাকে আমি সহজ ভাষায় এই সব কটি প্রশ্নের উত্তর দেবো । [Blockchain] অর্থ হচ্ছে ব্লক দিয়ে তৈরি চেইন বা ব্লকের চেইন। অনেকগুলো ব্লককে একটির সাথে আরেকটি জোড়া দেওয়ার মাধ্যমে ব্লকের একটি শিকল তৈরি করাই হচ্ছে ব্লক chain।  যে ব্লকগুলোর দ্বারা এই চেইনটি তৈরি করা হয় সেই ব্লকগুলো মূলত তথ্য সংরক্ষণ করে। মূলত  [Blockchain]  হচ্ছে একটি ডিস্ট্রিবিউটেড লেজার, যেটি সকলের জন্য উন্মুক্ত।   [Blockchain]  ব্লকগুলোর মধ্যে যখন একটি তথ্য ইনপুট দেওয়া হয় তখন ওই তথ্য ডিলিট করা বা ডেটাটির কোন ধরনের পরিবর্তন করা প্রায় অসম্ভব। সম্পূর্ণ  Block-chain প্রত্যেকটি সিঙ্গেল ব্লকে মূলত তিনটি জিনিস থাকে- ডেটা, হ্যাশ এবং চেইনে তার আগের ব্লকটির হ্যাশ। অর্থাৎ, ব্লক chain এ থাকা প্রত্যেকটি ব্লকে থাকে সেই ব্লকটির নিজস্ব ডেটা, ব্লকটির নিজের হ্যাশ এবং ঠিক তার পেছনে যুক্ত থাকা আগের ব্লকটির হ্যাশ। হ্যাশ হচ্ছে মূলত একটি আইডেন্টিফায়ার। প্রত্যেকটি ব্লকের হ্যাশ তার একেবারেই নিজস্ব এবং প্রত্যেকের জন্য নির্দিষ্ট। অর্থাৎ, দুটি ব্লকের হ্যাশ কখনোই এক হবেনা। এই বিষয়টি অনেকটা মানুষের ফিঙ্গারপ্রিন্টের মত। দুটি মানুষের ফিঙ্গারপ্রিন্ট যেমন এক হতে পারবে না কখনোই, তেমনি দুটি ব্লকের হ্যালো কখনো মিলবে না। আর এই হ্যাশগুলো জেনারেট হয় প্রত্যেকটি ব্লকের স্টোর করা ডেটা অনুযায়ী। যার মানে, একটি ব্লকের ডেটা যদি কোনোরকম পরিবর্তন করা হয়, তাহলে ওই ব্লকটির হ্যাশও চেঞ্জ হয়ে যাবে। প্রত্যেকটি ব্লক যদি তার আগে যুক্ত থাকা হ্যাশটিও রাখে, তাহলে কোন ব্লকের ডেটা কেউ ইচ্ছামতো চেঞ্জ করে ফেলতে পারবে না। তাই Block-chain ইনপুট দেওয়া বা ডেটা মুছে ফেলা বা পরিবর্তন করা প্রায় অসম্ভব। কারণ, এক্ষেত্রে আপনি যদি একটি ব্লকে থাকা ডেটা পরিবর্তন করতে চান তাহলে আপনাকে ওই ব্লকটির সাথে তার আগের সবগুলো ব্লকের ডেটা পরিবর্তন করতে হবে। 

চেইন প্রযুক্তি কি


চেইন টেকনোলজি অনেক পুরোনো একটি প্রযুক্তি। এই কৌশলটি প্রথম ১৯৯১ সালে স্টুয়ার্ট হ্যাবার এবং ডব্লিউ স্কট স্টর্নেটা ব্যাখ্যা করেছিলেন। [Blockchain] প্রযুক্তির মূল উদ্দেশ্য ছিল টাইমস্ট্যাম্প ডিজিটাল ডকুমেন্টস। যাতে কেউ এটিকে ব্যবহার বা পরিবর্তন করতে না পারে।ব্লকচেইনকে ভবিষ্যতের অর্থনীতির জন্য একটি বিপ্লবী প্রযুক্তি হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে, কিন্তু এই প্রযুক্তির উৎপত্তি সম্পর্কে খুব বেশি তথ্য পাওয়া যায় না। এটা বিশ্বাস করা হয় যে, এই [Blockchain] প্রযুক্তি ২০০৮ সালে বিটকয়েন আবিষ্কারের পর এই ক্রিপ্টো-মুদ্রাকে সমর্থন করার জন্য আবিষ্কৃত হয়েছিল। এটি এমন একটি আধুনিক প্রযুক্তি যা ছাড়া বিটকয়েন বা অন্য কোন ধরনের ক্রিপ্টো-কারেন্সি লেনদেন করা অসম্ভব।

ব্লক-চেইনের মালিক কে?


সংক্ষেপে বলতে গেলে, কেউ [Block-chain] এর মালিক নয়, আবার প্রত্যেকেই এটির মালিক। এটি ব্লক-চেইন প্রযুক্তির অনন্য বৈশিষ্ট্যগুলির মধ্যে একটি এবং এই সম্মিলিত মালিকানা এবং জবাবদিহিতাই ব্লকচেইনকে অত্যন্ত নিরাপদ এবং অপরিবর্তনীয় করে তুলেছে।

এর ইতিহাস 

ক্রিপ্টোগ্রাফিক টেকনোলজি ব্যবহার করে (Blockchain)নিয়ে সর্বপ্রথম কাজ করা হয় ১৯৯১ সালের দিকে, যদিও তা সফলতার মুখ দেখতে না পাওয়ার ফলে তার ব্যবহার বিস্তার লাভ করতে পারেনি। এর প্রকৃত ব্যবহারকে কাজে লাগান ২০০৮ সালে সাতোশি নাকামোতো নামে এক পরিচয় বিহীন ব্যক্তি। যিনি ক্রিপ্টোকারেন্সি তথা বিটকয়েনের (Bitcoin) লেনদেনের জন্য ব্লকচেইন টেকনোলজির(Blockchain Technology) ব্যবহার শুরু করেন । বর্তমানে যার ফলে এর ব্যবহার সম্পর্কে আজ বিশ্বব্যাপি সচেতনতা বাড়তেই আছে। যেহেতু এর যাত্রা সফলভাবে শুরু হয়েছে বিটকয়েন ব্যবহারের মাধ্যমে, তাই সহজেই এই টেকনোলজি বুঝতে হলে বিটকয়েন (Bitcoin) কীভাবে ট্রান্জেকশন হয় তা দেখা গেলে বিষয়টি সহজে বুঝা যায়।

চেইন কীভাবে কাজ করে?

ব্লকচেইন হ্যাশ ফাংশন দিয়ে কাজ করে। হ্যাশ ফাংশন যেকোনো ছোট বা বড় শব্দ বা বাক্যকে সমান দৈর্ঘ্যের সংকেতে পরিণত করতে পারে। মূল শব্দ বা বাক্যের দৈর্ঘ্য যাই হোক না কেন, হ্যাশ ফাংশন থেকে যে হ্যাশ বেরোবে, তার দৈর্ঘ্য সমান। প্রতিটি লেনদেনের তথ্য হ্যাশ ফাংশনের মাধ্যমে সংকেতাবদ্ধ করে তারপর ব্লকে যোগ করা হয়। বিটকয়েন বা যেকোনো ক্রিপ্টোমুদ্রায় হ্যাশ গুরুত্বপূর্ণ। বিটকয়েনে এসএইচএ-২৫৬ হ্যাশ ব্যবহার করা হয়, যেটা সাইবার নিরাপত্তার জন্য প্রথম সারিতে পড়ে। এসএইচএ-২৫৬ আমেরিকার এনএসএর (ন্যাশনাল সিকিউরিটি এজেন্সি) আবিষ্কার। এই হ্যাশ ফাংশন, যেকোনো শব্দমালাকে ২৫৬ দীর্ঘ সংকেতে পরিণত করে। 


মৌলিক বিষয় 

একটি দক্ষতায় বিশেষজ্ঞ হওয়ার জন্য, মৌলিক বিষয়গুলি শেখা একটি দুর্দান্ত সূচনা পয়েন্ট।ব্লক+চেইন ডেভেলপমেন্টে যাওয়ার আগে, আপনাকে প্রথমে বুঝতে হবে চেইন কী। 

ব্যবহারের সুবিধাসমূহ 

এটি একটি টেকনোলজি খুবই নিরাপদ এবং দ্রুতগামী হয়। নিরাপদ এই কারণে যে, আপনি এটির ব্যবহারে মাধ্যমে যে ট্রান্জেকশন করা হয় তা হ্যাক করে গরমিল তৈরি করা সম্ভব নয়। মনে করেন ,আপনি ব্লক+চেইন ব্যবহার করে কাউকে কোন কারেন্সি দিলেন, এই ট্রানজেকশটি সাথে সাথেই সিস্টেমের সাথে জড়িত সকল কম্পিউটারে পৌঁছে যায়। কারণ, আপনার ট্রাঞ্জেকশনের সাথে পূর্বের ট্রাঞ্জেকশনের সংযোগ যোগ হয়ে যায়। আর এভাবেই একটি ট্রান্জেকশন হ্যাস অন্য একটি ট্রান্জেকশন গ্যাসের সাথে লিংক হয়ে যায় চেইন সিস্টেম এভাবে চলতেই থাকে।এই  টেকনোলজিকে হ্যাক করে এর তথ্যের মাঝে কোন গরমিল করতে চাইলে হ্যাকারকে একই সময়ে হাজার হাজার কম্পিউটার হ্যাক করতে হবে, যা অসম্ভব। কারণ,একটি ট্রান্জেকশন তৈরি হওয়া মাত্রই তার তথ্য হাজার হাজার কম্পিউটারে সাথে সাথে চলে যায়। একটি ব্লক তৈরি হতে প্রায় সময় লাগে কমবেশি ১০ মিনিট এর মত। একটি ব্লকের সম্পূর্ণ তথ্য পরিবর্তন করতে; হ্যাকারের হাতে ১০ মিনিটের কম সময় থাকবে। আর ১০ মিনিট সময়েরে মধ্যে হাজার হাজার কম্পিউটার হ্যাক করাতে পারা কথাটা যেন হাস্যকর ছাড়া আর কিছুই না।

ক্রিপটোকারেন্সি ফ্যাক্ট

বিটকয়েন ট্র্যানজেকশনের ক্ষেত্রে সিকিউরিটির চিন্তা করে প্রত্যেকটি নতুন ব্লক প্রতি ১০ মিনিট পরপর তৈরি করা হয়। তাই আপনি একটি ট্র্যানজেকশন রিকুয়েস্ট করলে ওই ট্র্যানজেকশন নিয়ে নতুন একটি ব্লক তৈরি করতে ১০ মিনিট অপেক্ষা করতে হয়।

জনপ্রিয়তা 

ব্লক+চেইন হ্যাক করা সত্যিই অসম্ভব যা উপরের লেখা থেকে হয়ত স্পষ্ট ধারণা পেয়েছেন। এছাড়া খুব কম সময়ের মধ্যে আপনি আপনার লেনদেন সম্পন্ন করতে পারছেন। এই টেকনোলজির জনপ্রিয়তা দিন দিন বেড়েই চলেছে। ক্রিপ্টো কারেন্সির সফলতা দেখে অনেক ধরনের ব্যাংক এই টেকনোলজির মাধ্যমে লেনদেনের পরিকল্পনা নিয়েছে । কিছু কিছু ব্যাংক পরীক্ষা চালিয়ে যাচ্ছে। কারণ, মানুষ যে কর্মই করুক না কেন টাকা পয়সার সিকিউরিটি না থাকলে উপার্জন করে শান্তিতে ঘুমানো কঠিন।


বিশ্ব এখনও ব্লকচেইন কে বুঝতে সময় নিচ্ছে, তবে কয়েক বছরের মধ্যে এটি আরো পপুলার হয়ে উঠবে।তাই বন্ধুরা, আমি আশা করি আপনি অবশ্যই এই Article টি পছন্দ করেছেন,।আমি সর্বদা এই কামনা করি যে আপনি সর্বদা সঠিক তথ্য পান। এই পোস্টটি সম্পর্কে আপনার যদি কোনও সন্দেহ থাকে তবে আপনাকে অবশ্যই নিচে মন্তব্য করে আমাদের জানান। শেষ অবধি, যদি আপনি Article পছন্দ করেন,তবে অবশ্যই এটি সমস্ত Social Media Platforms এবং আপনার বন্ধুদের সাথে Share করুন।

Comments (0)

Share

Share this post with others