ব্লগ নাকি ইউটিউব ইনকাম এর জন্য কোনটি সেরা?

Created by UY LAB in Earn Money 3 Mar 2024
Share

ব্লগ এবং ইউটিউব বর্তমান সময়ে এই দুটি ব্যাপকভাবে জনপ্রিয় এবং এই দুটির ব্যাপক চাহিদা রয়েছে I ব্লগ নাকি ইউটিউব আপনি যেটাই বলেন ভবিষ্যৎ আছে এই দুই সেক্টরেই। কিন্তু এটা নির্ভর করে আপনি কোন সেক্টরে ভালো দক্ষতা অর্জন করতে পারবেন তার ওপর।


যেখানে ইউটিউবে ভালো কন্টেন্ট এবং কিছু রিসার্চ করলে আশানুরূপ ফলাফল পাওয়া যায়, সেখানে ব্লগিংয়ে শুধু ভালো কন্টেন্ট তৈরি করাই শেষ কথা নয় বরং এর ক্ষেত্রে তুলনামূলক একটু বেশি রিসার্চ করার প্রয়োজন হয়ে থাকে । আপনাকে সফল হতে হলে কাজের ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে হবে সেটা ইউটিউবিং হোক আর ব্লগিং হোক। 


ব্লগ কী?

ওয়েব্লগ" শব্দটি ১৭ ডিসেম্বর, ১৯৯৭ সালে জর্ন বার্গার দ্বারা উদ্ভাবিত হয়েছিল।সংক্ষিপ্ত রূপ, "ব্লগ" শব্দটি পিটার মেরহোলজ দ্বারা উদ্ভাবিত হয়েছিল,ব্লগ ১৯৯০ এর দশকে শুরু হয়েছিল, প্রথম দিকে, ব্লগকে একটি ব্যক্তিগত অনলাইন ডায়েরির মতো ব্যবহার করা হত। কিন্তু সময়ের সাথে-সাথে পরিবর্তন আসতে শুরু করে, এখন ব্লগাররা তাদের ব্লগে এমন সব কন্টেন্ট লিখেন যেগুলি মানুষের প্রয়োজন। বর্তমানে, ওয়েবে ৫৭০ মিলিয়নেরও বেশি ব্লগ সাইট রয়েছে। 

মূলত ব্লগ হল একটি তথ্যমূলক ওয়েবসাইট। Blog শব্দটিও "weblog" থেকে নেওয়া হয়েছে। আর এর বাংলা প্রতিশব্দ হলো ব্লগ।

সহজ কথায়, ব্লগ হলো এক ধরনের অনলাইন ডায়েরি, এখানে এক বা একাধিক লেখক লেখার মাধ্যমে তার মনের  ভাব প্রকাশ করেন , পোস্ট করেন,এটিকে ডিজিটাল কন্টেন্ট বা আর্টিকেল বলে । 

লেখক কোন বিষয়ে তার ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা বা ব্যক্তিগত জ্ঞান অন্যদের সাথে ভাগ করে থাকেন এই ব্লগ পোস্ট, আর্টিকেল,বা কন্টেন্ট এর মাধ্যমে। 

আর অনেকগুলো আর্টিকেল নিয়ে একটি ব্লগ ওয়েবসাইট হয়ে থাকে। আর যিনি এই আর্টিকেলগুলো লিখে পাবলিশ করেন তিনি একজন ব্লগার।

ইউটিউব কী?


ইউটিউব বর্তমানে গুরুত্বপূর্ণ একটি ভিডিও  প্ল্যাটফর্মI ভিডিও শেয়ার করার একটি সামাজিক বা অন্যতম মাধ্যম হচ্ছে ইউটিউব। ইউটিউব (YouTube) হলো সান ব্রুনো, ক্যালিফোর্নিয়া ভিত্তিক একটি অনলাইন ভিডিও প্ল্যাটফর্ম সেবার সাইট এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম, যা ২০০৫ সালের ফেব্রুয়ারিতে প্রকাশিত হয়। । ২০০৬ সালের অক্টোবরে, গুগল সাইটটিকে ১.৬৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের বিনিময়ে ক্রয় করে নেয়। এখন ইউটিউবে শুধু ভিডিও শেয়ার করা না, ভিডিও ক্লিপ, সিনেমা, গান, ডকুমেন্টরি এবং আরো নানা ধরনের ভিডিওর বিশাল একটি ভিডিও ভান্ডার হিসেবে পরিণত হয়েছে। এছাড়া এখন ইউটিউবে এডভার্টাটাইজিং এর ব্যাপার যুক্ত হয়েছে ,আপনি চাইলে ইউটিউবের মাধ্যমে কোনো পণ্য বা সেবার প্রচার করতে পারবেন I

ব্লগ এবং ইউটিউব এই দুটির মধ্যে পার্থক্য  


ইউটিউব এবং ব্লগিং এর মধ্যে যেমন বিভিন্ন বিষয় মিল রয়েছে তেমনি অনেক পার্থক্যও রয়েছে। ইউটিউব এবং ব্লগিং এর মধ্যে পার্থক্য সমূহ-


১.ব্লগিং করার জন্য আপনার অবশ্যই ডোমেইন-হোস্টিং কিনতে হবে। কিন্তু ইউটিউব-এর ক্ষেত্রে আপনার কোন ডোমেইন-হোস্টিং কিনতে হবে না।

 

২.ব্লগিং-এ আপনি যেকোনো রিসোর্স যেমন,   আর্টিকেল,অডিও,ভিডিও,ছবি ইত্যাদি আপলোড করতে পারবেন। কিন্তু ইউটিউবে ভিডিও ছাড়া অন্য কোনো রিসোর্স আপলোড করা যায় না। তবে আপনি চাইলে ইউটিউবে মার্কেটিং করতে পারবেন, অ্যাড দিতে পারবেন।


৩.একটি ব্লগিং ওয়েবসাইট আপনি আপনার পছন্দমতো ডিজাইনও অপটিমাইজ করতে পারবেন। কিন্তু ইউটিউবে সেটি করা যায় না। 


৪.ব্লগিং-এর ক্ষেত্রে ওয়েবসাইট এবং এবং কন্টেন্ট সবকিছুর মালিক আপনি নিজেই এবং আপনার নিজের ইচ্ছেমতো সেটিকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারবেন। আপনি যদি ইউটিউব-এর নীতিমালা না মানেন তাহলে ইউটিউব চাইলে আপনার চ্যানেল বন্ধ করে দিতে পারবে।


৫.ব্লগিং-এর ক্ষেত্রে আয়ের উৎস বেশি। আপনি চাইলে এডসেন্স ছাড়াও সরাসরি কোনো কোম্পানির বিজ্ঞাপন দেখিয়ে আয় করতে পারবেন। অন্যদিকে ইউটিউবে আয়ের উৎস তুলনামূলক কম।।


৬. ব্লগিং ওয়েবসাইট ডিজাইন করা এবং ম্যানেজ করাও কিছুটা জটিল। অন্যদিকে ইউটিউবের ক্ষেত্রে এই ধরনের ডিজাইন করার প্রয়োজন হয় না এবং চ্যানেল ম্যানেজ করা একদম সহজ। তবে আপনার অবশ্যই ভিডিও এডিটিং সংক্রান্ত পর্যাপ্ত জ্ঞান থাকতে হবে।


ব্লগিং করার ক্ষেত্রে কী কী প্রয়োজন


নতুন ব্যক্তিদের কাছে ব্লগিং বিষয়টা অনেক কঠিন মনে হতে পারে। তবে যখন আপনি সম্পূর্ণ নতুন ভাবে ব্লগিং শুরু করবেন তখন আপনার যা দরকার হবে সেগুলো হলো,

  1. ডোমেইন

  2. হোস্টিং

  3. থিম

  4. প্লাগইন

  5. কন্টেন্ট


প্রাথমিক ভাবে উপরের এই জিনিস গুলো দিয়ে আপনি ব্লগিং এর যাত্রা শুরু করতে পারবেন। তবে পরবর্তী সময়ে কখন কি করতে হবে সেটা অবশ্যই আপনাকে ব্লগিং গাইডলাইন ফলো করতে হবে।


ব্লগ নাকি ইউটিউব কোনটি সেরা?


ব্লগ এবং ইউটিউব আপনাদেরকে মোটামুটি এই দুটির ব্যাপারে ধারণা দেয়া হয়েছে, আর এখন আপনাদের একটু ছোট করে ধারণা দিবো এই  দুটি সেক্টর থেকে আপনি কেমন ইনকাম করতে পারবেন I যাতে করে আপনি ব্লগ করবেন নাকি ইউটিউবিং করবেন এই বিষয়ে যেন প্রোপার ডিসিশন নিতে পারেন I


ইউটিউবিং এর মাধ্যমে টাকা আয়


ইউটিউবে গুগল এডসেন্স-এর বিজ্ঞাপন দেখিয়ে আয় করা হয়। তবে, আপনার ইউটিউব চ্যানেলে বিজ্ঞাপন দেখাতে ইউটিউব-এর কিছু নীতিমালা আছে, তার মধ্যে প্রধান হল আপনার ইউটিউব চ্যানেলে কমপক্ষে ১০০০ সাবস্ক্রাইবার এবং ৪০০০ ঘণ্টা ওয়াচটাইম এটা বাধ্যতামূলক থাকতেই হবেI


আপনার চ্যানেলের কন্টেন্ট অনুসারে বিভিন্ন বিজ্ঞাপন দেখিয়ে থাকে সেই বিজ্ঞাপনে ক্লিক, ভিউ অনুসারে একজন ইউটিউবারকে পেমেন্ট দিয়ে থাকে। বাংলাদেশে এমন অনেক ইউটিউবার আছেন যারা প্রতিমাসে ইউটিউব থেকে লক্ষ লক্ষ টাকা আয় করেন।



ব্লগিং এর মাধ্যমে টাকা আয়


ইউটিউবে যেমন একজন ইউটিউবার বিভিন্ন ভিডিও তৈরি করে এবং সেটা ইউটিউবে শেয়ার করার মাধ্যমে টাকা আয় করেন। ব্লগিংও ঠিক তেমনই তবে, ব্লগিংয়ে বিভিন্ন আর্টিকেল লিখে সেটা শেয়ার করার মাধ্যমে আয় করা হয়।


অনেকেই হয়ত মনে করেন ব্লগিং অনেক জটিল কাজ। অনেকেই হয়ত ওয়েবসাইট এর কথা মনে করে কোডিং এর কথা  চিন্তা করেই এটাকে জটিল মনে করেন। কিন্তু আপনি চাইলে কোডিং ছাড়াই ব্লগার বা ওয়ার্ডপ্রেস এর মাধ্যমে অল্প সময়ের মধ্যে একটা ব্লগ সাইট তৈরি করতে পারবেন।



ইউটিউবিং করার ক্ষেত্রে কী কী প্রয়োজন


নতুনরা ইউটিউবে ভিডিও আপলোড করার মাধ্যমে ক্যারিয়ার শুরু করতে চাইলে কি কি জিনিস প্রয়োজন হবে সেটি নিয়ে চিন্তিত থাকে। ইউটিউবিং শুরু করতে হলে প্রথমে যা দরকার সেগুলো হলো –

  1. ভিডিও ক্যামেরা

  2. ভিডিও এডিটিং সফটওয়্যার ও

  3. ভিডিও নিয়ে কাজ করার উপযোগী পিসি বা ল্যাপটপ

শুধুমাত্র এই ছোট ৩টি জিনিস দিয়েই ইউটিউবিং শুরু করা যায়। ভিডিও এডিট করার জন্য আপনাকে অবশ্যই ভালো কোন এডিটিং সফটওয়্যার ব্যবহার করতে হবে। ইন্টারনেটে আপনি বিনামূল্যের অনেক ভিডিও এডিট করার সফটওয়্যার পাবেন। কিন্তু সেগুলো ব্যবহার না করাই উত্তম। আপনি যে সফটওয়্যার ব্যবহার করতে চান না কেন, সেটি কিনে ব্যবহার করুন। ভিডিও এডিটিং আপনি নিজেই করতে পারবেন। কিছুদিন ধৈর্য ধরে কাজটি শিখলে এটি কারো জন্যই তেমন কঠিন কোনো কাজ নয়।


আজকের এই আর্টিকেলে আমরা আপনাদের সাথে আলোচনা করলাম ব্লগ নাকি ইউটিউব আপনার জন্য কোনটা বেস্ট। আমরা আগেই বলেছি এই দুইটি সেক্টরে রিয়েল ভাবে ইনকাম করা যায়। এখন আমাদের আলোচনা অনুসরণ করে সিদ্ধান্ত নিতে পারেন আপনি কোন  সেক্টরে কাজ করতে চান। আশা করি যে আপনি বিষয়ে দক্ষতা অর্জন করতে পারবেন সেটা নিয়েই ঝাঁপিয়ে পড়ুন তাহলেই আপনি দ্রুত সাফল্য অর্জন করতে পারবেনI

Comments (0)

Share

Share this post with others