ফাইভার গিগ প্রমোট করার ১০ টি অব্যর্থ টিপস

Created by UY LAB in Freelancing 21 Jan 2024
Share

ফাইভার হচ্ছে একটি জনপ্রিয় ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেস,আপনি যে সেবা অফার করেন এবং বাজারে বিক্রি করেন তাকে বলা হয় গিগ। আপনার ফাইভার গিগ হল সম্ভাব্য গ্রাহকদের কাছে আপনার প্রতিভা প্রদর্শন করা এবং সেইসাথে অর্ডার দেওয়ার আগে তাদের প্রয়োজনীয় সমস্ত তথ্য প্রদান করার একটি সুযোগ।সারাবিশ্বের  প্রেক্ষাপটে এটি খুবই জনপ্রিয় মার্কেটপ্লেস। শুধু বাংলাদেশে জনপ্রিয় বিষয়টি এমন না সারাবিশ্বে ফাইভারের বেশ ভালো জনপ্রিয়তা রয়েছে। ফাইভারের সবচেয়ে বড় সুবিধা হচ্ছে, এখানে সবচেয়ে কম রেটে কাজ পাওয়া এবং কাজ দেওয়া যায়। এই সকল দিক বিবেচনা করে ফাইভারের গুরুত্ব সবার নিকট রয়েছে। ফাইভার একটি ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেস যেখানে যে কেউ অনলাইনে সার্ভিস বিক্রি করতে পারে এবং কিনতে পারে। বর্তমান সময়ে এটি সারা বিশ্বের সবচেয়ে জনপ্রিয় ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেস যাদের রয়েছে ২ মিলিয়ন প্লাস গিগের ডেটাবেজ। 

ফাইভার মার্কেটে এসেছে ২০১০ সাল থেকে। ফাইভার নামকরণ করা হয়েছে কারণ শুরুতে এখানে শুধু পাঁচ ডলারের কাজ করা যেত। তাদের যাত্রার শুরুর প্রথম পাঁচ বছর এই নিয়ম অব্যাহত ছিল। পরে ২০১৪ সালে তারা পাঁচ ডলারের লিমিটটি প্রত্যাহার করে নেয়। যার ফলে মার্কেটপ্লেস আরো বেশি গতি পেয়েছে কাজের ক্ষেত্রে। এতে করে আরো উন্নত মানের গিগ দেখা যেতে লাগলো খুব কম সময়ে। বর্তমানে এই মার্কেটপ্লেসে প্রায় সব ধরনের কাজ পাওয়া যায়, এখন  অনেক উন্নতমানের গিগ রয়েছে, যেখান থেকে যে কেউ তার জন্য সবচেয়ে বেস্ট জব সেল করতে পারবে এবং কিনতে পারবে। 

ফাইভার গিগ কী ?


গিগ হলো আপনার অফার করা একটি সার্ভিস এর নাম।অর্থাৎ একজন ফ্রিল্যান্সার কি দামে তার সার্ভিস বিক্রি করবেন, কি কি অফার করবেন, কি কি এক্সট্রা সুবিধা দিবেন এ সকল বিষয় যে পেইজের মাধ্যমে বর্ণনা করে থাকে, তাকে ফাইভার গিগ বলা হয়ে থাকে। প্রতিটি গিগ পাঁচ ডলার থেকে শুরু করে হাজার ডলার পর্যন্ত হতে পারে। সাধারণত বেশি দামের সেল গুলো বেশি উন্নত মানের সার্ভিস হয়ে থাকে।প্রাথমিকভাবে ফাইবার আপনার শিগগির মূল্য $৫ ডলারে অফার বা বিক্রি করছে কাস্টমারের / বায়ারের কাছে এবং আপনাকে গিগ তৈরির সময় আপনার দেওয়া শর্ত অনুসারে সম্পন্ন করতে হবে।আপনি যখন গিগ তৈরি করেছিলেন তখন এই উল্লেখ করেছেন যে, আমি আমার অফারটি বা আমার গিগি অর্ডার করলে, দুই (২) দিনের এর ভিতর বা পূর্বে শেষ করে দিব। ঠিক যথা সময় এ সার্ভিস টি আপনাকে ডেলিভার করতে হবে ।

অ্যাকাউন্ট ক্রিয়েশন


শুধু নতুন একটা ফাইভার গিগ খুললেই আপনি সেই ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেসে কাজ করতে পারবেন না। সেই সাথে প্রয়োজন প্রোফাইল অপটিমাইজেশন। অর্থাৎ যে টেকনিক এবং স্ট্র্যাটেজি অবলম্বনের মাধ্যমে আপনার প্রোফাইল ক্লায়েন্ট বা বায়ারের সম্মুখে আসবে সেই বিষয়টি অবশ্যই নিশ্চিত করতে হবে এবং সময়ের সাথে তা আপগ্রেড করতে হবে।   

কীভাবে এটি তৈরি করতে হবে?


ফাইভার গিগ তৈরি করার জন্য লগ ইন করার পর ডান পাশে যেখানে আপনার আইডি সহ সবুজ রঙের ডলার চিহ্ন সহ একটি বক্স দেখতে পাবেন অথবা আপনার আইডির পাশে একটি ছোট্ট ডাউন চিহ্ন দেখতে পাবেন। এবার ক্লিক করুন, একটি মেনু নিচের দিকে পুল ডাউন হবে। এরপর My Sales থেকে Create A Gig, ক্লিক করুন। এরপর যা যা রিক্রুমেন্ট আছে তা ফিলআপ করুন।

 প্রোফাইল অপটিমাইজেশন

আপনার গিগ এ ঢুকেই সবার আগে যা চোখে পরে তা হলো আপনার ছবি। প্রোফাইল পিকচার হিসেবে কোনো ছবি বাছাই করার ক্ষেত্রে সতর্ক হোন। মনগড়াভাবে যেনতেন ছবি ব্যবহার থেকে বিরত থাকুন। এমন কোনো ছবি ব্যবহার করবেন না, যেখানে আপনার ব্যক্তিত্বে আঘাত হানে। সিম্পল হাস্যোজ্জ্বল হবে আপনার চেহারা। কোট-টাই প্রয়োজন নেই। টি-শার্ট পরা ছবি হলে ভালো হয়। আপনার চেহারাকে আকর্ষণীয় করবে এমন পোশাক পরা ছবি বাছাই করুণ। খুবই সাধারণ ব্যাকগ্রাউন্ড রাখুন। অমলিন এক হাসি দেয়া পোর্ট্রেট সাইজের ছবি রাখুন প্রোফাইল পিকচার হিসেবে। প্রয়োজনে প্রফেশনাল কোনো ফটোগ্রাফার দিয়ে আজই একটি ছবি তুলে নিন।

টাইটেল-ট্যাগ ও ডেসক্রিপশন

আপনার দক্ষতা অনুযায়ী ট্যাগ ও ডেসক্রিপশন লিখুন। একই ধাঁচের কাজের নাম দিয়ে টাইটেল-ট্যাগ লাইন বসান। আপনি HTML, CSS, HTML5, CSS3, PSD to HTML, PHP, JavaScript, WordPressএসব কাজ ভালো জানেন। তাহলে এগুলো বসান টাইটেল-ট্যাগ হিসেবে। কিন্তু একই সাথে ওয়েব ডিজাইন, ইন্টারনেট মার্কেটিং, অ্যাপ্লিকেশন ডেভেলপমেন্ট, সার্ভার রক্ষণাবেক্ষণ, কাস্টমার সার্ভিস ও কনসালট্যান্সি জাতীয় কাজ আপনার প্রোফাইলে রাখবেন না। এতে আপনার প্রোফাইলের সক্ষমতা নষ্ট হয়। যা করছেন তাতে ইন্ডাস্ট্রিতে আপনি সহজে দক্ষতা অর্জন করতে পারবেন। সফলতাও পাবেন। এ ছাড়া সার্চ ইঞ্জিনে আপনাকে খুঁজে পেতে টাইটেল অংশটি বিরাট ভূমিকা রাখে। ডেসক্রিপশন লেখার ক্ষেত্রে ক্রিয়েটিভিটি প্রদর্শন করুন। প্রথম লাইনে এমন কিছু বলার চেষ্টা করুন যেন ক্লায়েন্ট দেখামাত্র সম্পূর্ণটি পড়ার সিদ্ধান্ত নেয়।

আকর্ষণীয় পোর্টফোলিও উপস্থাপন করুন   

বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই ফ্রিল্যান্সাররা এই ব্যাপারে খুব উদাসীন থাকেন এবং সময়ের সাথে নিজের পোর্টফলিও আপডেট করেন না যার ফলে তার এডভান্সড স্কিলগুলো সঠিকভাবে উপস্থাপন হয় না। সেক্ষেত্রে আপনি সেই দক্ষতা অর্জন করতে পারলেও এবং আপনার সক্ষমতা থাকার সত্ত্বেও বায়ার আপনার কাজের ক্ষেত্রে সংশয় প্রকাশ করেন। আপনি যদি নতুন হয়ে থাকেন সেক্ষেত্রে আপনি কিছু কাজ করে প্রোফাইল ভারি করতে থাকেন। আর যদি দীর্ঘদিন ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেসে কাজ করতে থাকেন তাহলে মাস শেষে এমন সময় রাখুন যেখানে আপনি নিয়মিত প্রোফাইল আপডেট করতে পারবেন। সেই সাথে সৃজনশীলভাবে আপনার পোর্টফলিও কে আরো সুন্দর এবং আকর্ষণীয় কীভাবে করা যায় তার উপর গুরুত্ব আরোপ করুন। 

পর্যাপ্ত সময়ের পাশাপাশি  সংযোগ রক্ষা করা

আপনি অবশ্যই প্রতিদিন মার্কেটপ্লেসে সময় দেন এবং দিবেন সেই সাথে ব্যক্তিগত এবং পারিবারিক কাজে আপনাকে ব্যস্ত থাকতে হয়। সেক্ষেত্রে অবশ্যই এমন পদ্ধতি অনুসরণ করেন যেখানে আপনি মার্কেটপ্লেসে নিরবিচ্ছিন সংযোগ রক্ষা করতে পারবেন। কারণ, কাজের জন্য নতুন হোক পুরাতন হোক বায়ার আপনাকে খুঁজতে পারে। সেক্ষেত্রে জরুরি মুহূর্তে আপনি তাকে সাড়া দিতে পারেন সেই ব্যবস্থা করতে হবে। নতুন বায়ারের ক্ষেত্রে অবশ্যই সচেতন থাকতে হবে যেখানে সে দ্রুত সাড়া দেয়াকে খুব পজিটিভিটি মনে করেন এবং অন্যের কাছে কাজ হস্তান্তরের ঝুঁকিও কম থাকে।


কম্পিটিটর এর উপর নজর রাখুন

মার্কেটপ্লেসে আপনার মত অনেকেই একই সার্ভিস প্রদান করে থাকেন। তারা কোন কোন বিষয়ে বিশেষভাবে দক্ষ এবং তারা কীভাবে ক্লায়েন্টকে সার্ভিস প্রদান করে আসছে সেই সংক্রান্ত বিষয়গুলো আপনার নজরে রাখুন। কি কি সার্ভিস প্রদান করলে পরে বায়ার আপনার থেকে বেনিফিটেড হবেন এবং আলাদা ভ্যালু এড করবে সেই সম্পর্কে সুস্পষ্ট ধারণা ক্লায়েন্টকে অবহিত করুন।


ভিডিও ডেসক্রিপশন

ফ্রিল্যান্সার পেশা মানেই নতুন কিছু করতে চাওয়ার আগ্রহ। তাই নতুনত্বের মর্যাদা এখানেই সবচেয়ে বেশি। প্রায় সব ফ্রিল্যান্স/আউটসোর্সিং মার্কেটপ্লেস তাদের কন্ট্রাক্টরদের জন্য নতুন এ ফিচারটি যোগ করেছে। আপনি এখনই নিজের সম্পর্কে কিছু বলে ভিডিও রেকর্ড করে আপলোড করে দিতে পারেন আপনার প্রোফাইলে। সর্বোচ্চ এক মিনিটের একটি ভিডিওতে আপনি কী ধরনের কাজ করেন, কাজের প্রতি আপনার আগ্রহ, কোন নীতিতে কাজ করেন ও সর্বশেষে ক্লায়েন্ট কীভাবে-কোথায় আপনার সাথে যোগাযোগ করতে পারে তা বলুন। 

কেমন হবে কাজের রেট

আপনি ঘণ্টাপ্রতি কত দামে কাজ করতে আগ্রহী, তার একটি সাধারণ ধারণা ক্লায়েন্ট আপনার প্রোফাইলে দেয়া ঘণ্টাপ্রতি দাম থেকে পায়। কাজেই এটি নির্বাচনের সময় ভেবেচিন্তে লিখুন। সবচেয়ে ভালো হয় অন্যান্য দক্ষ ব্যক্তি কী দামে কাজ করে তা জানা। তাদের কাজের সাথে আপনার কাজের তুলনা করুন। এরপর ঠিক করুন ঘণ্টাপ্রতি কাজের দাম কত হওয়া উচিত। তবে কখনই কম দামে কাজ করবেন না। আপনার কাজের দাম কী সেটা আগে জানুন, পরে দাম ঠিক করুন। একটি নীতিতে বিশ্বাস রাখবেন : ‘Do it free rather than doing it less’.

পোর্টফোলিও

এ পর্যন্ত যত ফ্রিল্যান্স কাজ করেছেন তার স্ক্রিনশট নিয়ে ওই কাজের বিবরণ ও লাইভ লিঙ্কসহ আপনার প্রোফাইলে যোগ করতে পারেন। এখানে উল্লেখ্য, আজেবাজে কোনো কিছু পোর্টফোলিও শেয়ার হিসেবে যুক্ত না করাই বুদ্ধিমানের কাজ। এতে আপনার ইমেজ নষ্ট হওয়া থেকে বেঁচে যাবে। তাই আপনার প্রোফাইলটি যে ধরনের কাজ করার জন্য তৈরি করতে চাচ্ছেন, সে সম্পর্কিত অনুশীলন ও অন্য ক্লায়েন্টের জন্য করা কাজের স্ক্রিনশট দিতে পারেন। তবে অবশ্যই তাদের অনুমতি সাপেক্ষে।

অনেকেই শুধু ফাইভার গিগ এর ওপর নির্ভরশীল। এটা না করে  উচিত হবে সর্বোচ্চ দুই থেকে তিনটা মার্কেটপ্লেস একসাথে নিয়ে কাজ করা। এক্ষেত্রে একটি মার্কেটপ্লেস থেকে কম অর্ডার আসলেও বাকি অন্যান্য মার্কেটপ্লেস আপনি ব্যালেন্স রাখতে পারবেন। আশা করি উপরে উল্লিখিত টিপস অবলম্বনের মাধ্যমে আপনি ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেস থেকে অধিক পরিমাণে কাজ পেতে সাহায্য করবে এবং ফ্রিল্যান্সিং ক্যারিয়ার গঠনে আপনাকে সঠিক দিক নির্দেশনা প্রদান করবে। 

Comments (0)

Share

Share this post with others

অনলাইন কোর্সে ১০০% স্কলারশিপের সুযোগ

অনলাইন কোর্সে ১০০% স্কলারশিপের সুযোগ

আসন সংখ্যার উপর ভিত্তি করে ইউ ওয়াই ল্যাবের সকল অনলাইন কোর্সে পাবেন ১০০% স্কলারশিপ! আসন নিশ্চিত করতে রেজিঃ করুন এখনই।