অনলাইন বিজনেস শুরু করার ৭ টি সিক্রেট ফর্মুলা

Created by UY LAB in News 1 Feb 2024
Share

বর্তমান সময়ে অনলাইন বিজনেস এর চাহিদা দিন দিন হুহু করে বাড়ছে। বিশ্বের যত গুলো বিজনেস করার পদ্ধতি আছে তার মধ্যে অনলাইন বিজনেস সবক্ষেত্রে স্থান দখল করতে শুরু করে দিয়েছে।আর সেজন্যই আমার বা আপনার মতো এমন অনেকেই আছেন, যারা অনলাইন কে কাজে লাগিয়ে বিজনেস করে প্রচুর পরিমাণে টাকা ইনকাম করতে পারছেন।তাছাড়া নিজের ঘরে বসে ব্যবসা করার জন্য বিজনেসের কোনো বিকল্প নেই। এখানে আপনি স্বল্প পরিমাণ পুঁজি নিয়েই কোনো একটি ব্যবসা শুরু করতে পারবেন।

সবচেয়ে মজার বিষয় হলো, অনলাইনের ব্যবহারকারী বৃদ্ধি পাওয়ার কারণে, এখানে আপনি খুব সহজেই আপনার কাঙ্ক্ষিত কাস্টমারদের খুঁজে নিতে পারবেন।পণ্যের প্রচার বা প্রসার থেকে শুরু করে ডেলিভারি পর্যন্ত সবগুলো কাজ করতে পারবেন এই অনলাইনের মাধ্যমে।যেহেতু আপনি এই আর্টিকেলটি এখনও পড়ছেন। সেহেতু ধরে নিবো যে, আপনিও অনলাইন এর মাধ্যমে ব্যবসা করতে চান। যদি তাই হয়, তাহলে আজকের এই কন্টেন্টটি আপনার জন্য অনেক হেল্পফুল হতে চলেছে।


চলুন আজকে বিস্তারিত আলোচনা করবো এই ব্যাপার নিয়ে 


আপনি যদি একজন বিগেনার লেভেলের হয়ে থাকেন। তাহলে কীভাবে আপনি অনলাইন ব্যবসা এর শুরু করবেন।কীভাবে কাজ করতে হবে এবং কীভাবে আপনি ও অন্যদের মতো টাকা ইনকাম করবেন। (অনলাইন ব্যবসার কৌশল) তার সবগুলো কৌশল আজকে তুলে ধরবো।তাই আপনিও যদি অনলাইন ব্যবসার বিস্তারিত জানতে চান। তাহলে একটু সময় নিয়ে আজকের সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি মনোযোগ দিয়ে পড়বেন ৷তাহলে আশা করি আজকের পর থেকে আপনার online business সিস্টেম সম্পর্কে আর কোনো কিছু অজানা থাকবে না।আসুন আর দেরি না করে শুরু করা যাক।

অনলাইন বিজনেস কী 


সহজ কথায় আপনি যখন অনলাইন এর মাধ্যমে কোনো ব্যবসা করবেন তখন তাকে বলা হবে অনলাইন বিজনেস ।অর্থাৎ, নিজের ঘরে বসে ইন্টারনেট কানেকশন এর মাধ্যমে কোনো ব্যবসাকে পরিচালনা করার প্রক্রিয়াকে বলা হয় online business।যেমন ধরুন, আপনার একটি মোবাইল এর শো রুম আছে, যেখানে কাস্টমাররা সরাসরি আপনার শো রুমে এসে মোবাইল কিনে নিয়ে যায়।এখন আপনি চাচ্ছেন যে, কাস্টমাররা সরাসরি আপনার শো রুমে আসার পাশাপাশি অনলাইনের মাধ্যমে মোবাইল বিক্রি করবেন সেজন্য আপনি একটা ওয়েবসাইট তৈরি করলেন,এবং সেই ওয়েবসাইটে বিভিন্ন মডেলের ফোনের পিক এবং দাম সেট করে দিলেন।এখন কাস্টমাররা আপনার সেই ওয়েবসাইটে এসে মোবাইল গুলো দেখবে এবং কেনার জন্য আপনাকে সরাসরি অর্ডার করবে। এরপর আপনি কুরিয়ার করে সেই কাস্টমারকে মোবাইল ফোনটি পাঠিয়ে দিবেন।মূলত এটিই হলো  online business এর মূল প্রক্রিয়া।আমরা সবাই জানি যে, বর্তমানে প্রযুক্তির খুব দ্রুত উন্নয়ন হচ্ছে। সেই সাথে আমরাও ক্রমে ক্রমে প্রযুক্তির উপর নির্ভর হয়ে পড়ছি।সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম থেকে শুরু করে কেনাকাটা পর্যন্ত সব কাজ এখন অনলাইন এর মাধ্যমে করতে আমরা অভ্যস্ত হয়ে পড়েছি।আর সেই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে অনেকেই ব্যবসা করার জন্য বেছে নিয়েছে অনলাইনকে। যেখানে নিজের ঘরে বসে কাজ করে স্বাবলম্বী হয়ে উঠছেন অনেকেই ৷অনলাইন বিজনেস শুরু করা তেমন কোনো কঠিন কাজ নয় তবে, যদি বলেন সফল হতে চান,তবে এই বিষয়ে ফোকাস করুন।

পণ্য/সার্ভিস

প্রথমেই আপনি ঠিক করুন কোন পণ্য কিংবা সার্ভিস দিয়ে ব্যবসা শুরু করবেন। অনলাইনে অগণিত উদ্যোক্তা রয়েছে বিভিন্নরকম পণ্যের কিংবা সার্ভিসের ব্যবসার জড়িত রয়েছে , আপনি কি সেল করবেন ঠিক করতে হবে আপনাকেই। কারো দেখাদেখি কিংবা অনুকরণ না করে নিজে যে পণ্যের উপর বিশ্বাস করেন, যে পণ্য নিয়ে আপনার ভালো ধারণা আছে ,যেটার প্রতি আপনার ফাস্সিন্যাশন আছে সেটা নিয়েই আগান। চিন্তা করুন আপনার পণ্য আপনি নিজে ব্যবহার করবেন কিনা বা আপনার পরিবার, বন্ধুবান্ধব ব্যবহার করবে কিনা,এই সাধারণ একটি চিন্তা আপনাকে বেশ কনফিডেন্স যোগাবে, সাথে আপনি নিজে বুঝতে পারবেন সঠিক পণ্য নিয়েই আগাচ্ছেন কিনা।

বিজনেস প্ল্যান করা

পণ্য বা সেবা নির্বাচন করুন। আপনি কি পণ্য বা সেবা দিতে চাচ্ছেন, কোন শ্রেণীর লোক মূলত আপনার ক্রেতা হবে, তা নির্দিষ্ট করুন।কী ওয়ার্ড রিসার্চ করুন, কি পরিমাণ সম্ভাব্য ক্রেতা আছে, কত গুলো প্রতিযোগী কোম্পানি আছে, আপনার অবস্থান, বাজেট, মার্কেটিং পলিসি কি হতে পারে তা নির্ধারণ করুন।

মার্কেট অ্যানালাইসিস

কি নিয়ে বিজনেস করবেন ঠিক করলেন, সে পণ্যের চাহিদা কেমন, কারা কিনবে, কতবার কিনবে এ ধরনের ব্যাপারগুলো নিয়ে স্টাডি করুন। দেখা গেল এমন পণ্য নিয়ে কাজ করছেন যেটার তেমন চাহিদা নেই, কিংবা আপনার পণ্যের টার্গেট কাস্টমারদের কাছে সেল না করে যার চাহিদা নেই তার কাছে সেল করতে চাচ্ছেন। সেক্ষেত্রে ব্যবসার গ্রোথ আশানুরূপ হবে না, বরং ব্যর্থ হওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হবে।তাই মার্কেট বুঝুন ভালো করে,যাদের টার্গেট করছেন কাস্টমার হিসেবে তাদের সাথে কথা বলুন, সার্ভে করতে পারেন, কম্পিটিটরদের অ্যাক্টিভিটি দেখুন, তাদের পেইজ কিংবা গ্রুপে কাস্টমার কি মতামত দিচ্ছে এবং কি চাচ্ছে মনোযোগ দিয়ে অ্যানালাইসিস করুন, অন্যের ভুল থেকে নিজে শিখুন।

বিজনেস প্ল্যান লেখা

আপনার পণ্য বা সেবাকে সঠিক ভাবে ক্রেতার নিকট বোধগম্য করার জন্য কন্টেন্ট লিখুন, নিয়মিত কন্টেন্ট যেমন: কি কি পণ্য / সেবা দিচ্ছেন, এর সুবিধা কি কি, কাদের জন্য এইরকম কন্টেন্ট দিচ্ছেন।আপনার কোম্পানির প্রোফাইল পেজ, কন্টাক্ট পেজ, প্রাইভেসি পেজ, টার্মস এন্ড কন্ডিশন পেজ এবং অন্য কোনো কোম্পানির সাথে অ্যাফিলিয়েট থাকলে ডিসক্লেইমার পেজ এন্ড ডিসক্লোজার পেজ তৈরি করুন।এরপর অনপেজ এস ই ও করে আপনার সবগুলো পেজকে সঠিকভাবে আপনার পূর্বে নির্বাচিত কী ওয়ার্ড অনুযায়ী অপ্টিমাইজেশন করে নিন।

সাপ্লাই চেইন ও ডিস্ট্রিবিউশন

পণ্য কোথা থেকে এবং কীভাবে সোর্স করবেন ঠিক করে নিন। চেষ্টা করুন সোর্সিং প্রসেসটা যেন স্মুথ এবং যথাসম্ভব অল্প খরচে করা যায়, এতে প্রোডাক্টে আপনার প্রফিট মার্জিন বাড়বে। পণ্য সোর্স কেবল একটি হলে ব্যাকআপ হিসেবে আরো ২-৩টি সোর্স যোগ করুন। তবে এক্ষেত্রে পণ্যের কোয়ালিটি নিয়ে আপোষ করবেন না । সবসময় এমনভাবে সোর্সগুলোকে রেডি রাখুন যাতে কোনো কাস্টমারকে খালি হাতে যেতে না হয়।পণ্য নিজে ম্যানুফেকচার করলে কতটুক ম্যানুফেকচার করতে পারবেন এবং কীভাবে ম্যানুফাকচারিং প্লেস থেকে কাস্টমারের কাছে পৌঁছাবেন তা ঠিক করুন। 

ডিস্ট্রিবিউশন খুবই জরুরি অনলাইন ব্যবসার ক্ষেত্রে। বেকারি পণ্যের ডিস্ট্রিবিউশন প্রসেস ফ্যাশন পণ্যের ডিস্ট্রিবিউশনের মত হবে না। সঠিক পণ্যের জন্য সঠিক ডিস্ট্রিবিউশন প্রসেস করুন। অন্যথায় কাস্টমার স্যাটিসফেকশন নিয়ে প্রশ্ন করতে পারে। খুব ভালো প্রোডাক্ট, খুব সুন্দর বিজনেস প্ল্যান থাকার পরেও ব্যবসা ফেইল করতে পারে যদি একটি স্ট্রং সাপ্লাই চেইন এবং ডিস্ট্রিবিউশন নিশ্চিত করতে না পারেন। কাজেই সতর্ক থাকুন এমন ছোটখাটো ব্যাপারে।



ডোমেইন নেম রেজিস্টার

ডোমেইন নাম নিবন্ধন করুন, এমন একটি ডোমেইন নাম নির্বাচন করুন, যেন নাম থেকেই আপনার বিজনেস এর ধরণ বুঝা যায়, এতে করে মানুষ সহজে মনে রাখতে পারবে ।


ওয়েবসাইট এবং সোশ্যাল মিডিয়া


অফলাইন বিজনেসে আমরা কাস্টমারকে যেমনটা দোকানে প্রোডাক্ট সেল করি ঠিক তেমনি অনলাইনে কাস্টমারকে আমরা ওয়েবসাইটে পণ্য সেল করি। ওয়েবসাইটই আপনার ডিজিটাল দোকান। একটি ওয়েবসাইট থাকলে কাস্টমার আপনাকে যেমন স্মার্ট ভাববেন তেমন আপনার উপর বিশ্বাস বাড়বে। অনলাইন ব্যবসার ক্ষেত্রে বিশ্বাস খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি ফ্যাক্টর। কিন্তু কথা হল ব্যবসা শুরু করছেন এখনই কি ৪০-৫০ হাজার টাকা খরচ করে ওয়েবসাইট বানাবেন? এটা মোটেও ভালো বুদ্ধি হবে না। বর্তমানে এমন অনেক প্ল্যাটফর্ম আছে যেগুলো দিয়ে নিজেই ই-কমার্স ওয়েবসাইট সেটাপ করে নেয়া যায় কোনো ডেভেলপারের সহযোগিতা ছাড়াই। নিজেই ৫ মিনিটে নিজের ওয়েবসাইট বানিয়ে নিন । অর্ডার ম্যানেজমেন্ট থেকে শুরু করে পেমেন্ট, ডেলিভারি এবং ই-কমার্সের যাবতীয় ফিচার পেয়ে যাবেন। সব ম্যানেজ করতে পারবেন মোবাইল অ্যাপ ও ওয়েব প্যানেল যেকোনো জায়গা থেকেই।তাছাড়া নিজের ব্যবসার জন্য ফেসবুক, ইন্সটাগ্রামের মত সোশ্যাল মিডিয়াগুলোতে পেইজ খুলে ফেলুন। ওয়েবসাইটটি পেইজে যোগ করে দিন। প্রতিনিয়ত পেইজে কন্টেন্ট দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন, কাস্টমারের মেসেজ এবং কমেন্টের রেসপন্স করুন। সাথে নিজের ব্যবসার একটা কমিউনিটি গড়ে তুলুন ফেসবুক গ্রুপের মাধ্যমে। এতে আপনার Customer  নিজেদের মতামত আরো সহজে দিতে পারবে, আপনার আপডেট আরো দ্রুত পাবে। কমিউনিটির মাধ্যমে ব্র্যান্ড বিল্ড করা এবং লয়াল Cuবেইজ বানানো অনেক বেশি ইফেক্টিভ হতে পারে।


তাহলে বন্ধুরা, অনলাইন বিজনেস মানে কী ? কীভাবে শুরু করবেন ? যেকোনো সেবা বা প্রোডাক্ট যেগুলি আপনারা অনলাইন ইন্টারনেটের মাধ্যমে লোকেদের বিক্রি বা প্রদান করে ইনকাম করতে পারবেন সেই মাধ্যমকেই আপনি একটি অনলাইনে করা ব্যবসা হিসেবে নিতে পারবেন।এবং এরকম অনেক ধারণা বা আইডিয়া রয়েছে যেগুলি এখনো কেও অনলাইন মার্কেটে নিয়ে আসেনি। তাই, আপনার প্রথমেই সেই বিজনেস আইডিয়া গুলির ব্যাপারে ভেবে অনলাইন কাজ শুরু করতে হবে।


Comments (0)

Share

Share this post with others