নিজের অজান্তে যেভাবে আমাদের মনোযোগ ক্ষমতা নষ্ট করছে স্মার্টফোন

Created by UY LAB in Freelancing 17 Mar 2024
Share

বর্তমান পৃথিবীতে ২.৫ বিলিয়নেরও বেশি মানুষ স্মার্টফোন ব্যবহার করে এবং তাদের অধিকাংশই এই ডিভাইসটি ছাড়া সময় কাটানোর কথা ভাবতেও পারে না। বর্তমানে স্মার্টফোন আমাদের জীবনের একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ হয়ে উঠেছে I আধুনিকায়নের এই যুগে স্মার্টফোন ছাড়া যেমন চলা যায় না, তেমনি এর অতিরিক্ত ব্যবহারের জন্য রয়েছে ভয়াবহ ক্ষতির সম্ভাবনা।


সমাজের প্রতিটি স্তরের মানুষের মধ্যে স্মার্টফোনের আসক্তি মহামারির মতো ছড়িয়ে গেছে । শুধু প্রাপ্তবয়স্ক নয়, এ আসক্তি থাবা বসিয়েছে শিশু-কিশোরদের অভ্যাসেও। আমরা অনেকেই ঘুমানোর আগে রাত জেগে ফোনে ইন্টারনেট ব্যবহার করে সময় কাটাই। এতে কি পরিমাণ শারীরিক ক্ষতি হচ্ছে তা আমাদের কল্পনার বাহিরে। রাত জেগে মোবাইল ফোনের স্ক্রিনে আটকে থাকা স্বাস্থ্যের জন্য অনেক বেশি ক্ষতিকর বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা। 


স্মার্টফোন কি ?


২০ বছর আগের সিমন স্মার্টফোনটি বর্তমানে লন্ডনের বিজ্ঞান জাদুঘরে রাখা হয়েছে। ১৯৯৪ সালের ১৬ আগস্ট বিশ্বের প্রথম স্মার্ট ফোনটি তৈরি হয়। প্রযুক্তিপণ্য নির্মাতা আইবিএম এর তৈরি এই ফোনটির নাম ছিল সিমন। স্মার্টফোন হলো হাতের মোবাইল কম্পিউটিং যন্ত্র। মোবাইল অপারেটিং সিস্টেম দ্বারা চালিত, উন্নত ও শক্তিশালী হার্ডওয়্যার দ্বারা সক্ষম ছোট ডিভাইস হচ্ছে স্মার্ট ফোন। স্মার্ট ফোন ব্যবহারের মাধ্যমে আমরা ইন্টারনেট, মাল্টিমিডিয়া, অ্যাপ ও সফটওয়্যার এবং ফোন কল দেওয়ার মতো সুযোগ পেয়ে থাকি।


বর্তমানে আধুনিক পৃথিবীর সাথে তাল মিলানোর জন্য সর্বক্ষেত্রে ফোন ব্যবহার করা হয় এবং এই Smartphone ব্যবহার করে কম্পিউটারের মত সুবিধা পাওয়া যায়। অর্থাৎ বর্তমানে এই মোবাইল ফোন দ্বারা কম্পিউটারে যতগুলো কাজ করা সম্ভব তার প্রত্যেকটি সাধারণভাবে করা যেতে পারে। অর্থাৎ বর্তমানে মোবাইল ফোন এত বেশি স্মার্ট হয়েছে যে এটির মাধ্যমে সকল প্রকার সুযোগ-সুবিধা উপভোগ করা সম্ভব হয়েছে।


মুঠোফোন ব্যবহারে বিশেষজ্ঞদের মতামত


২০১৮ সালে আগস্ট মাসে, যুক্তরাজ্যের টেলিকম রেগুলেটর অফকম জানিয়েছিল, মানুষ গড়ে প্রতি বারো মিনিটে তাদের ফোন চেক করে। ৭১ শতাংশ কখনোই তাদের ফোন বন্ধ করে না। আর ৪০ শতাংশ মানুষ ঘুম ভাঙার পাঁচ মিনিটের মধ্যে Android ফোন হাতে নেয় I 


এছাড়া বিশেষজ্ঞরা আরো বলেন মোবাইলফোন আসক্ততার কারণে চোখের জ্যোতি কমে যেতে পারে, কানের শ্রবণশক্তি হ্রাস পেতে পারে, শরীরের অস্থি-সন্ধিগুলোর ক্ষতি তো আছেই। মার্কিন গবেষকদের মতে, টয়লেট সিটের তুলনায় ১০গুণ বেশি ব্যাকটেরিয়া মুঠোফোনে থাকে। ব্যবহূত মুঠোফোনটি নিয়মিত পরিষ্কার এবং তা ব্যবহারে আমাদের সচেতন হওয়া উচিত।   



ট্রিস্টান হ্যারিস এর ভাষ্যমতে,


ট্রিস্টান হ্যারিস গুগলের ডিজাইন এথিসিস্ট হিসেবে কাজ করেছিলেন। এখন তিনি ‘টাইম ওয়েল স্পেন্ট’ নামের একটি সংস্থা চালান, যার প্রধান কাজ হচ্ছে, আধুনিক কোম্পানিগুলো কীভাবে আমাদের মনোযোগ কেড়ে নিয়ে তা থেকে মুনাফা অর্জন করে যাচ্ছে, সে সম্বন্ধে আপনাদের জানানো। 


স্মার্টফোনের এই প্রবল আকর্ষণ থেকে মুক্ত হওয়ার জন্যে ট্রিস্টান হ্যারিস সহজ কিছু পরামর্শ দিয়েছেন। সেগুলো হল-


১. একেবারে প্রথম পদক্ষেপটি হচ্ছে, সবগুলো নোটিফিকেশন বন্ধ করে দেওয়া।সাধারণত কেউ যোগাযোগ করতে চাইলে কল এবং টেক্সট মেসেজের মাধ্যমেই তা করে থাকে। 


অনেকগুলো অ্যাপ রয়েছে, যেগুলো এ ধরনের সামাজিক ইন্টার‍্যাকশনের একটি মায়া তৈরি করে। যেমন: ফেসবুক যদি নোটিফিকেশন পাঠায় যে, কোনো একজন বন্ধু একটি ইভেন্টে যেতে আগ্রহী, সেক্ষেত্রে তারা একজন পাপেট মাস্টারের ভূমিকা পালনের চেষ্টা করছে। সামাজিক সম্পর্ক তৈরি করার জন্যে তারা এভাবে আকাঙ্ক্ষা বৃদ্ধি করে থাকে, যেন আপনি তাদের অ্যাপটি আরো বেশি পরিমাণে ব্যবহার করেন।



২. দ্বিতীয় পরামর্শ হচ্ছে, ফোনের স্ক্রিন সাদাকালো বা ‘গ্রেস্কেল’ করে দেওয়া। মানুষের চোখ উষ্ণ রংগুলোর প্রতি বেশি সংবেদনশীল। স্ক্রিনের মধ্যে খুব সহজেই ব্যবহারকারীকে আকর্ষণ করার উপায় হচ্ছে এই রংগুলো। আইট্র্যাকিং পরীক্ষাগুলোতে দেখা গেছে, উজ্জ্বল লাল রং সবচেয়ে বেশি আকর্ষণ তৈরি করতে সক্ষম। এ কারণেই, বেশিরভাগ অ্যাপ তাদের আইকনগুলো নতুন করে ডিজাইন করলে  উজ্জ্বল ও উষ্ণ রংগুলোই ব্যবহার করে। একই কারণে নোটিফিকেশন বাবলগুলো লাল রঙের হয়।


আধুনিক ফোনগুলোর অ্যাক্সেসিবিলিটি সেটিংয়ে এই অপশনটি পাওয়া যাবে। সবগুলো অ্যাপই সাদাকালো দেখালে মস্তিষ্ক কোনো অ্যাপের প্রতি বাড়তিভাবে আকৃষ্ট হবে না। স্লট মেশিনগুলোতে উজ্জ্বল রঙের আধিপত্য দেখার পেছনে এটাই সবচেয়ে বড় কারণ।



৩. স্মার্টফোন হোম স্ক্রিনে শুধু নিত্যদিনের প্রয়োজনীয় অ্যাপগুলোই রাখতে হবে। অর্থাৎ, ফোন আনলক করার পরে, যে অ্যাপগুলো আপনার জীবনযাপনে প্রয়োজনীয়, শুধু সেগুলোই যেন চোখের সামনে দেখতে পান। এরকম কিছু অ্যাপ হচ্ছে, উবার, ম্যাপস, ক্যালেন্ডার। এই অ্যাপগুলো ব্যবহারকারীকে ‘বটমলেস ভরটেক্স অব স্টাফ’-এ টেনে নামানোর সামর্থ্য রাখে না।


কিভাবে মনোযোগ নষ্ট করছে স্মার্টফোন


আমাদের বর্তমান কাজ এবং ক্রিয়াকলাপ বা আমাদের প্রতিদিনের কাজ থেকে আমাদের মনোযোগ সরিয়ে দিচ্ছে সেল ফোন ৷ সেলফোনের নোটিফিকেশনের কারণে কাজ থেকে মনোযোগ নষ্ট হলে ফিরিয়ে আনা কষ্টকর। আর সেই নোটিফিকেশন হতে পারে কোনো বিজ্ঞাপন, অবসর সময়ে সমস্যা না হলেও, কাজের মধ্যে এই ধরনের নোটিফিকেশনের শব্দে মনোযোগ ছুটে গেলে ফিরিয়ে আনতেও সময় লাগে।


এই বিষয়ে অস্ট্রেলিয়ার ‘ডিকন ইউনিভার্সিটি স্কুল অফ সাইকোলজি’র জ্যেষ্ঠ অধ্যাপক শ্যারন হরউড সিএনএন’য়ের একটি প্রতিবেদনে লেখেন, “ব্যাপার হচ্ছে ‘সাইলেন্ট মুড’য়ে থাকুক বা না থাকুক মনোযোগ কেড়ে নেওয়ার জন্য ফোন সামনে থাকাটাই যথেষ্ট।


স্মার্টফোনের অতিরিক্ত ব্যবহারে মানসিক ও শারীরিক হুমকি 


সেল ফোনের বিকিরণ মস্তিষ্কের ক্যান্সার, একাগ্রতা, চোখের সমস্যা, স্ট্রেস বৃদ্ধি, নিউরোডিজেনারেটিভ ডিসঅর্ডার, হার্টের অ্যাটাকের ঝুঁকি, প্রজনন ক্ষমতা এবং শ্রবণ প্রতিবন্ধকতার মতো সমস্যা দেখা দিতে পারে। এমস এবং ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অফ মেডিকেল রিসার্চ (আইসিএমআর) এক গবেষণায় দাবি করা হয়েছে যে, মোবাইল রেডিয়েশনের কারণে মানুষ বধিরও হতে যেতে পারে।


ক্ষতিকর রেডিয়েশন থেকে নিজেকে রক্ষা করবেন যেভাবে


৫০ মিনিটের বেশি সময় ধরে আপনার সেল ফোন ব্যবহার করা আপনার মস্তিষ্কে চাপ সৃষ্টি করে। কিন্তু আমরা ঘণ্টার পর ঘণ্টা মোবাইলে কথা বলতে থাকি। তাই আমাদের উচিত হেডফোন ব্যবহার করা। এখন বাজারে ব্লুটুথ হেডফোনও চলে এসেছে। তবে এটি কতটা নিরাপদ তা নিয়ে প্রশ্ন আছে। তাই আপনি কথা বলার সময় তারযুক্ত হেডফোন ব্যবহার করুন। 


রেডিয়েশন থেকে মুক্তি দিতে এমন কিছু সংস্থা রয়েছে যা অ্যান্টি-রেডিয়েশন কেস তৈরি করেছে। এই কেসগুলোর বাহিরটা সিন্থেটিক এবং ভিতরটা মাইক্রোফাইবার দিয়ে তৈরি। এই উপকরণগুলো আপনার ফোনকে সুরক্ষিত করার পাশা-পাশি রেডিয়েশনকে প্রতিরোধ করে। 


সাধারণত, ব্যবহারের পরে সেল ফোন আপনার পকেটে থেকে যায়। কিন্তু মোবাইল ব্যবহার না করলেও এর থেকে রেডিয়েশন বের হয়। সুতরাং মোবাইল ফোন পকেটে রাখা মোটেই নিরাপদ নয়। এই কারণে আপনি যখন ফোন ব্যবহার করছেন না, তখন উচিত হয় এটিকে ব্যাগে রাখা নয়তো হাতে রাখা। যে-সব জায়গায় নেটওয়ার্ক সিগন্যাল কম পাচ্ছেন সেখানে মোবাইল কম ব্যবহার করাই উচিত। 


রাত জেগে মুঠোফোন ব্যবহারের শারীরিক ক্ষতি


 মাত্রাতিরিক্ত ফোন ব্যবহারের ফলে হতে পারে যে-সব ক্ষতি  


১. যারা রাতে ঘুমানোর আগে স্মার্টফোন ব্যবহার করেন তাদের ঘুমের অভাব হতে পারে। এটি আপনার মস্তিষ্ক এবং মানসিক ক্ষতির কারণ হয়ে দাড়াতে পারে ।এরফলে  হতে পারে আরো সমস্যা ,আপনার শরীর দুর্বল হয়ে যাবে এবং কাজে মন বসবে না ।



৩.ঘুমানোর আগে সোশ্যাল মিডিয়ায় যুক্ত হয়ে পড়েন অনেকে। এতে মোবাইল ফোনের ক্ষতিকর নীল আলো সরাসরি চোখে আঘাত করে, ফলে চোখের কোষের ক্ষতি হয় ও চোখে ব্যথা অনুভব হয়।  


৪. আমেরিকান ম্যাকুলার ডিজেনারেশন অ্যাসোসিয়েশনের মতে, সেল ফোনের নীল আলো স্থায়ীভাবে রেটিনার ক্ষতি করতে পারে এবং এটি আপনার অন্ধত্বের কারণ হতে পারে। 


৫. রাত জেগে ফোন ব্যবহার করলে ঘুম থেকে বঞ্চিত হবেন। ফলে মানসিক স্বাস্থ্য খারাপ হয়ে যেতে পারে। এছাড়া ঘুমের অভাবে চিন্তা শক্তি ও শারীরিক শক্তিও কমে যেতে পারে।


৬. বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, সেল ফোনগুলি ইলেক্ট্রোম্যাগনেটিক রেডিয়েশন ছড়ায়, যা নির্দিষ্ট ধরণের ক্যান্সার হওয়ার ঝুঁকি বাড়িয়ে তুলতে পারে।


অ্যান্টেনার বিকিরণ 


ফোন অ্যান্টেনার কাছে সবচেয়ে বেশি বিকিরণ ছড়ায়। আধুনিক ফোনে, এই অ্যান্টেনা ফোনের পিছনে অবস্থিত। বেশিরভাগ মানুষ ফোন ব্যবহার করার সময় অ্যান্টেনা মাথার উলটো দিকে থাকে। কিন্তু মাথার যত কাছে অ্যান্টেনা থাকে, ততই ঝুঁকিও বাড়তে থাকে।


ধারণা করা হয়, মোবাইল ফোনের কাছাকাছি শরীরের যে-সব কোষ থাকে, সেগুলো বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়, আর দূরের কোষ কম ক্ষতিগ্রস্ত হয়। তাই যতটুকু সম্ভব নিজেকে ফোন থেকে দূরে রাখুন I


স্মার্টফোনের আসক্তি কাটানোর কয়েকটি উপায়


ফোনের আসক্তির অন্যতম কারণ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের প্রতি দুর্বলতা। যারা একটু পরপর ফেসবুক বা টুইটারে ঢুকার অভ্যাস আছে, তাদের জন্য  স্টে ফোকাস নামের এই অ্যাপটি আপনাদের আসক্তি কমাতে সহায়তা করতে পারে। কারন এর মাধ্যমে আপনি  প্রতিদিন কতবার ফেসবুক অ্যাপ চালু করেন বা কত সময় চালাচ্ছেন এমন হিসাব জানতে পারবেন, তা থেকে কতটা সময় নষ্ট হচ্ছে তা জেনে নিতে পারবেন।


এর মাধ্যমে আপনি ফোনে থাকা কোন অ্যাপ কতবার চালু করবেন তা নির্ধারণ করে দিতে পারবেন। পরে অ্যাপটি নোটিফিকেশনের মাধ্যমে জানিয়ে দেবে আপনি নির্দিষ্ট সীমার চেয়ে বেশি অ্যাপটি ব্যবহার করতে চাইছেন।


এ অ্যাপে ব্যবহারকারীরা নিজেদের প্রয়োজন অনুযায়ী প্রোফাইল তৈরি করতে পারবেন। ৪.৫ রেটিংপ্রাপ্ত অ্যাপটি গুগল প্লে স্টোর থেকে বিনা মূল্যে ডাউনলোড করা যাবে। তবে অনেকেই প্রশ্ন তুলেছেন, যে জিনিসের প্রতি আসক্তি থাকে সেটির মাধ্যমেই আসক্তি কাটিয়ে ওঠা কতটা সম্ভব?


মনোরোগ বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, যে কোনো ধরনের আসক্তি কমানোর পদ্ধতি ব্যক্তিবিশেষে আলাদা হয়। ফলে নির্দিষ্ট কিছু অ্যাপ সবার মোবাইল আসক্তির জন্য কার্যকর হবে, এমনটা নিশ্চিত করে বলা মুশকিল।

তাহলে ভয়াবহ এই আসক্তি থেকে মুক্তির উপায় কী? ফোনের এরূপ আসক্তিকে বিজ্ঞানীরা ’নোমোফোবিয়া বলছেন। নোমোফোবিয়া থেকে বাঁচতে বিশেষজ্ঞরা কিছু উপায় জানিয়েছেন। সেগুলো হল- 


ফোন ব্যবহারের সময় নির্ধারণ


স্মার্টফোন ব্যবহারের সময় নির্ধারণ করুন। দিনে কতবার ব্যবহার করবেন তা ঠিক করে নিন। প্রথমে সিদ্ধান্ত নিন দিনে ২০ বারের বেশি Android-Phone দেখবেন না। এ ছাড়া খাওয়া ও লোকজনের সঙ্গে কথা বলার সময়ও ব্যবহার করবেন না।


মুঠো ফোন নিয়ে বিছানায় নয়


ঘুমানোর আগে ফোন বন্ধ করে ঘুমানোর অভ্যাস করতে হবে। ঘুমানোর সময় ফোন বন্ধ করলে তেমন কোনো ক্ষতি নেই এটা ভেবে ফোন খোলা রাখবেন না । ঘুমের অভাব বা অনিদ্রার অন্যতম কারণ আসক্তি। সকালে ঘুম থেকে ওঠার জন্য অনেকেই তাদের ফোনে অ্যালার্ম সেট করতে পারেন।


বেশিরভাগ ক্ষেত্রে, ব্যবহারকারীরা জেগে ওঠে, অ্যালার্ম বন্ধ করে এবং তাদের ফোনের নোটিফিকেশন চেক করা শুরু করে ৷ এ ধরনের সমস্যা এড়াতে মোবাইল অ্যালার্ম এঁর পরিবর্তে অ্যালার্ম ঘড়ি ব্যবহার করতে পারেন।

 

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম বন্ধ


আপনার হাতে থাকা Android Phone থেকে অপ্রয়োজনীয় অ্যাপ সরিয়ে ফেলুন। ফেসবুক ও টুইটারের মতো সামাজিক যোগাযোগের অ্যাপগুলো দরকারি হলেও আসক্তি কমাতে চাইলে এসব অ্যাপ সরিয়ে ফেলতে পারেন। আরও অনেক অ্যাপ আছে, যেগুলো সময় নষ্ট করে। এ ধরনের অ্যাপ সরালে আপনার মূল্যবান সময় বাঁচবে এবং ফোনের স্টোরেজ ও চার্জ কম ফুরাবে।


আড্ডায় Smart-Phone পরিহার


অনেকেই পারিবারিক কিংবা বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডার মাঝেও মুঠোফোনে ব্যস্ত থাকেন। এর ফলে পারিবারিক বন্ধন হালকা হয়ে যায়। তাই এসব পরিস্থিতিতে Phone এড়িয়ে চলাই শ্রেয়।


মেডিটেশন


দিনে অন্তত ১০-১৫ মিনিট মেডিটেশন বা অন্য কোনো মেন্টাল রিল্যাক্সেশন এক্সারসাইজের জন্য নির্ধারিত রাখুন। শুধু মোবাইল নেশা নয়, যে কোনো ক্ষেত্রেই নিজের মনকে নিয়ন্ত্রণ করার এটি একটি কার্যকর উপায়।


আপনাদের উদ্দ্যেশে পরামর্শ হচ্ছে,আমরা প্রতিনিয়ত স্মার্টফোন অনেক বেশিই ব্যবহার করে থাকি। অনেকে নিজেদের এই অপ্রয়োজনীয় ব্যবহারের সময়টুকু মারাত্মকভাবে অবমূল্যায়ন করে থাকে। আপনার ফোনে শুধু নিত্যদিনের প্রয়োজনীয় অ্যাপগুলোই রাখার চেষ্টা করুন। অর্থাৎ, ফোন আনলক করার পরে, যে অ্যাপগুলো আপনার জীবনযাপনে প্রয়োজনীয়, শুধু সেগুলোই যেন চোখের সামনে দেখতে পান সেই ব্যবস্থা করা করুন। এই বদ-অভ্যাস থেকে নিজে বিরত থাকুন, আর যতটুকু সম্ভব মুঠোফোন দূরে রাখুন ও সুস্থ থাকুন।

Comments (0)

Share

Share this post with others