নতুন ওয়েবসাইটে অর্গানিক ট্র্যাফিক বাড়ানোর ৭ টি কার্যকারী উপায়

Created by UY LAB in Digital Marketing 11 Feb 2024
Share

মনে করুন, আপনি একটি নতুন ওয়েবসাইট তৈরি করেছেন, কিন্তু আপনার সাইটে ট্রাফিক বা ভিজিটর নেই। এটি নিঃসন্দেহে খুবই হতাশাজনক। যে কেউই চাইবে তার তৈরি করা ওয়েবসাইটে ট্রাফিক আসুক। ট্রাফিক তো অনেকভাবেই আনা যায়। এর মধ্যে অর্গানিক ট্রাফিককেই বেশি মূল্যবান বলে মনে করা হয়। 


এই ট্রাফিকদের তাহলে আমার সাইটে কীভাবে আনা যায়? সে বিষয়টি নিয়েই আমাদের আজকের এই আর্টিকেলটা সাজানো হয়েছে। চলুন তার আগে ওয়েবসাইট কী, ট্রাফিক কী তা একটু জেনে নেই -

ওয়েবসাইট কী?


ওয়েবসাইট হচ্ছে ওয়েব পাতা এবং সম্পর্কিত বিষয়বস্তুর একটি সংগ্রহ, যা একটি সাধারণ ডোমেইন নাম দ্বারা চিহ্নিত করা হয় এবং অন্তত একটি ওয়েব সার্ভারে প্রকাশিত হয়। উল্লেখযোগ্য উদাহরণ হলো wikipedia.org, google.com, এবং amazon.com


ওয়ার্ল্ড ওয়াইড ওয়েব (WWW) ১৯৮৯ সালে ব্রিটিশ CERN পদার্থবিদ টিম বার্নার্স-লি তৈরি করেছিলেন। ৩০ এপ্রিল ১৯৯৩-এ, CERN ঘোষণা করেছে যে ওয়ার্ল্ড ওয়াইড ওয়েব (WWW), যেকোনও ব্যক্তির জন্য বিনামূল্যে ব্যবহার করা যাবে, যা ওয়েবের বিশাল বৃদ্ধিতে অবদান রাখবে।


ট্রাফিক কী?


প্রতিদিন আপনার ওয়েবসাইটে যত পাঠক বা ব্যবহারকারী আসে, তারাই হচ্ছে আপনার সাইটের ট্রাফিক। আর এই ট্রাফিকরা আসে Google Search, social media বা অন্য কোনো প্ল্যাটফর্ম থেকে।


অর্গানিক ট্রাফিক কী?

আজকের আলোচনার বিষয় হচ্ছে অর্গানিক ভিজিটর নিয়ে। এটি বলতে বোঝায় Search Engine (Google, Bing, Yahoo, Yandex ইত্যাদি)-এর মাধ্যমে যে ভিজিটর বা পাঠকেরা আপনার সাইটে ভিজিট করে বা ঘুরে যায়, তারা। ট্রাফিক না থাকলে আপনি অ্যাডসেন্সের মাধ্যমে টাকা উপার্জনের পথ করে নিতে পারবেন না। তাই এটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ।


অর্গানিক ট্রাফিক বাড়ানোর ৭ টি কার্যকরী পদ্ধতি


নতুন ওয়েবসাইটে আশানুরূপ ফল পেতে হলে ব্লগ বা সাইটে ট্রাফিকের কোনো বিকল্প নেই। আসুন তবে জেনে নিই কিছু সেরা পথ, যার মাধ্যমে আপনি চাইলে আপনার সাইটের ট্রাফিক খুব সহজেই বাড়াতে পারবেন।


এসইও (SEO) করা

আপনি যদি আপনার সাইটের ট্রাফিক বাড়াতে চান, তাহলে প্রথমেই যে বিষয়টি আসে, সেটি হচ্ছে এসইও (সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন)। সাধারণত আমরা কোনো বিষয় বা তথ্য জানার জন্য একটি নির্দিষ্ট কি-ওয়ার্ড লিখে সার্চ করে থাকি। তখন আমরা একটি রেজাল্ট পাই, যা গুগল আমাদের সামনে তুলে ধরে। গুগল সার্চে কিন্তু অনেকগুলো ফলাফল আসে। আবার অনেকগুলো পাতায় এই ফলাফল গুলো সাজানো থাকতে পারে। কিন্তু আমরা সাধারণত প্রথম দিকের সাজেশনগুলোই ফলো করে থাকি।

অধিকাংশ ক্ষেত্রেই গুগল সার্চের প্রথম পাতায় আসা রেজাল্টগুলো থেকেই আমরা আমাদের পছন্দের সাইটকে খুঁজে নিই। প্রথম পাতায় কোন ওয়েবসাইটের কন্টেন্ট দেখাবে, আর কোনটি দেখাবে না, তা নির্ভর করে এসইওর ওপর। যে ওয়েবসাইটের SEO যত ভালো, সে ওয়েবসাইট গুগল সার্চে তত এগিয়ে থাকবে।

গুগল সার্চের পদ্ধতির কথা মাথায় রেখে কনটেন্ট তৈরি, সেখানে প্রয়োজনীয় কি-ওয়ার্ড দেওয়া এবং এমন নানা কাজের মাধ্যমে এসইও করা হয়। প্রথম পাতায় কোনো একটি ওয়েবসাইটের কনটেন্ট দেখানোর কারণ হচ্ছে, প্রথমে দেখানো ওয়েবসাইটগুলোকে সঠিকভাবে এসইও করা হয়েছে। এসইও ঠিকমতো করা হলে সেই সাইট র‍্যাঙ্কিং পেয়ে প্রথমের দিকে থাকবে।

সঠিকভাবে এসইও করা হলে কেউ কোনো নির্দিষ্ট বিষয় নিয়ে গুগলে সার্চ করলে, সে বিষয়ের ওপর তৈরি ওয়েবসাইট কনটেন্ট বা সাইটটিকে গুগল সামনের দিকে দেখাবে। আর এর মাধ্যমেই ওই সাইটে প্রতিদিন অনেক অর্গানিক ভিজিটর আসা শুরু করবে। তাই ট্রাফিক বাড়াতে SEO একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। 


সোশ্যাল মিডিয়া শেয়ার


বর্তমান সময়ে সোশ্যাল মিডিয়া হচ্ছে খুবই জনপ্রিয় একটি প্ল্যাটফর্ম। আপনি চাইলে আপনার ওয়েবসাইটকে সঠিকভাবে বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়া (ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম, টুইটার, পিন্টারেস্ট ইত্যাদি) প্ল্যাটফর্মে মার্কেটিং করে প্রচুর ভিজিটর পেতে পারেন।

আপনি চাইলে আপনার সাইটের নাম দিয়ে বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মে অ্যাকাউন্ট বা পেজ তৈরি করে সেখানে প্রতিদিন কনটেন্ট শেয়ার করতে পারেন। সেই পেজকে যত সামনে এগিয়ে নেওয়া যাবে, অর্থাৎ এর সঙ্গে যত সোশ্যাল মিডিয়া আইডিকে যুক্ত করা যাবে, ততই প্রতিটি কনটেন্টে ট্রাফিক বাড়তে থাকবে।


গেস্ট পোস্টিং করা

কিছু ওয়েবসাইট রয়েছে, যেখানে আপনাকে কন্টেন্ট শেয়ার করতে, পোস্ট করতে এবং কন্টেন্ট থেকে লিংক নিতে দেবে। সেই সাইটগুলো খুঁজে নিয়ে আপনি চাইলে আপনার সাইটের জন্য গেস্ট পোস্টিং করে প্রচুর অর্গানিক ভিজিটরস পেতে পারেন।

এই সাইটগুলোতে আপনি খুব সহজেই কয়েকটি কন্টেন্ট পাবলিশ করতে পারবেন। সেখানে দেওয়া কন্টেন্ট গুলোতে কিছু সেরা কি-ওয়ার্ড যুক্ত করুন এবং ওই কি-ওয়ার্ড গুলোর সঙ্গে আপনার সাইটের কিছু কন্টেন্টকে যুক্ত করুন এবং সাথে সাথে সেগুলোকে কিছু ইন্টারনাল লিংক করুন। এই প্রতিটি পদক্ষেপ আপনাকে অর্গানিক ভিজিটর বা ট্রাফিক পেতে সহায়তা করবে।

ইন্টারনাল লিংক করার ফলে পাঠকেরা আপনার পোস্টটি পড়ার সময় আপনার এ্যাঙ্কর টেক্সটে ক্লিক করে আপনার সাইটে চলে আসবে অন্য আর্টিকেল দেখার আগ্রহ থেকে। এভাবে আপনি গেস্ট পোস্টিং করে নিজের সাইটে প্রচুর ট্রাফিক আনতে পারবেন।

ব্লগ কমেন্টিং


কিছু কিছু সাইট রয়েছে, যেখানে আপনি চাইলে কমেন্ট সেকশনে গিয়ে নিজের ওয়েবসাইট শেয়ার করতে পারবেন। এটাকে ব্লগ কমেন্টিং বলা হয়। আপনি চাইলে সুন্দর করে কমেন্টে আপনার সাইটের লিংক দিয়ে কমেন্ট করে নিজের ওয়েবসাইটে ট্রাফিক আনতে পারবেন। প্রথমে আপনি তাদের পোস্টটি পুরোটা ভালোভাবে পড়ে নিবেন। তারপর ঐ পোস্ট রিলেটেড ভালো কিছু কমেন্ট করুন, সাথে আপনার ওয়েবসাইটের লিংক যুক্ত করে দিন।


ফোরাম পোস্টিং/প্রশ্ন-উত্তর সাইট


এমন কিছু সাইট রয়েছে, যেখানে ফোরাম পোস্টিংয়ের সুবিধা রয়েছে। অনেক ভিজিটর রয়েছে, যারা তাদের অজানা বিষয়ে প্রশ্ন করে এসব সাইটে গিয়ে। ফোরাম ধাঁচের হওয়ায় এসব প্রশ্নের উত্তর অন্য ব্যবহারকারীদের কেউ না কেউ দিয়ে দেয়। এ ক্ষেত্রে আপনি যেটি করতে পারেন, সেটা হচ্ছে—আপনার কনটেন্ট রিলেটেড প্রশ্নগুলো খুঁজে বের করুন। সে ধরনের প্রশ্নের উত্তরের ঘরে গিয়ে উত্তরের সঙ্গে সঙ্গে নিজের সাইটে প্রকাশিত কনটেন্টটির লিংক জুড়ে দিন। ওই সাইটের ইউজারকারী তখন সম্পূর্ণ উত্তরটি পেতে আপনার লিংকে প্রবেশ করবে এবং এর মাধ্যমে আপনার সাইটে অর্গানিক ভিজিটরস বাড়বে।


ভিডিও মার্কেটিং

ওয়েবসাইট ট্রাফিক বাড়ানোর ক্ষেত্রে ইউটিউব, ভিডিও এর মতো ভিডিও শেয়ারিং সাইটগুলো খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। ভিডিও শেয়ার করে ট্রাফিক পেতে হলে আপনাকে অবশ্যই ভিডিও শেয়ার করে ডেসক্রিপশনে আপনার সাইটটির লিংক দিয়ে দিতে হবে। যাতে যে কেউ ডেসক্রিপশনে দেওয়া লিংকে ক্লিক করে আপনার সাইটে চলে আসতে পারে। 

ই-মেইল মার্কেটিং

বর্তমান সময়ে ই-মেইল মার্কেটিং, আরেকটি জনপ্রিয় মাধ্যম হিসেবে কাজ করছে। আপনার সাইটে ভিজিটর পাওয়ার ক্ষেত্রে ই-মেইল মার্কেটিং খুবই সহায়ক ভূমিকা রাখতে পারে।

বর্তমানে অনেক মানুষ আছে, যারা বিভিন্ন তথ্য পেতে ই-মেইল চেক করে। এ ধরনের মার্কেটিংয়ের মাধ্যমে আপনি সম্ভাব্য ব্যবহারকারীদের নিজের সাইটে প্রকাশিত কনটেন্টের লিংকসহ ই-মেইল করতে পারেন। এ ধরনের সেবাদাতা বেশ কিছু প্রতিষ্ঠান আছে দেশে ও বিদেশে। বৈশ্বিকভাবে বেশ কিছু প্রতিষ্ঠান বেশ বিশ্বস্ততার সঙ্গে এ সেবা দিয়ে আসছে। একটু গুগল করলেই এ নিয়ে বিস্তারিত জানতে পারবেন। ই-মেইল মার্কেটিংয়ের মাধ্যমেও বেশ ভালো সংখ্যক অর্গানিক ভিজিটর পেতে পারবেন। বাংলাদেশেও দিন দিন ই-মেইল মার্কেটিং এর ব্যবহার বেড়ে চলেছে।


উল্লিখিত সাতটি পদ্ধতি ব্যবহার করলে আপনার নতুন ওয়েবসাইটের অর্গানিক ট্রাফিক উল্লেখযোগ্যভাবে বাড়বে বলে আশা করা যায়। তবে প্রতিটি বিষয়ের ফলাফল নির্ভর করে দক্ষতার ওপর। এই প্রতিটি ক্ষেত্রে দক্ষতার সঙ্গে কাজ করলে ভিজিটর আসবেই আসবে।


দক্ষতা যত বাড়বে পদ্ধতিগুলোর কার্যকারিতা তত বাড়বে। যেমন-  ই-মেইল মার্কেটিংয়ের ক্ষেত্রে কোন কনটেন্টের লিংক ই-মেইলে পাঠাবেন, সোশ্যাল মিডিয়ায় কীভাবে পাঠাবেন, কত সময় পরপর কী কনটেন্ট শেয়ার করবেন বা এসইও করার সময় কোন-কোন বিষয়ের দিকে নজর দিবেন, কি-ওয়ার্ড সিলেকশন কেমন হবে, ইত্যাদি বিষয়ের ওপর, উপরের প্রতিটি পদ্ধতির কার্যকারিতা নির্ভর করে। কে বা না জানে! পদ্ধতিগুলো যত কার্যকর হবে ততই ট্রাফিক আসবে। আর ট্রাফিকের সংখ্যা বাড়লে আপনার ওয়েবসাইট থেকে আয়ের সম্ভাবনাও বাড়বে।


Comments (0)

Share

Share this post with others

অনলাইন কোর্সে ১০০% স্কলারশিপের সুযোগ

অনলাইন কোর্সে ১০০% স্কলারশিপের সুযোগ

আসন সংখ্যার উপর ভিত্তি করে ইউ ওয়াই ল্যাবের সকল অনলাইন কোর্সে পাবেন ১০০% স্কলারশিপ! আসন নিশ্চিত করতে রেজিঃ করুন এখনই।